
মালদহ: মালদহে বাংলাদেশ বর্ডার দিয়ে অবশেষে দেশে ফিরলেন অন্তঃসত্ত্বা সোনালি খাতুন এবং তাঁর ৮ বছরের নাবালক সন্তান। কিন্তু সোনালি ফিরলেও, তাঁর স্বামী-সহ অন্যান্য সদস্যরা ফিরতে পারেননি। তার জন্য কিছুটা ক্ষোভ সোনালির। দেশে ফিরে সোনালি বললেন, “বাংলাদেশে খুব কষ্টে ছিলাম। ভারতে ফিরে আসতে পেরে সত্যিই ধন্য। ৮ মাসের ওপরে বাংলাদেশের ছিলাম। দিল্লি পুলিশ আমাদের ওপর অমানবিক অত্যাচার করেছিল। আমরা অনেক অনুরোধ করেছিলাম। তারপরও আমাদেরকে বিএসএফকে দিয়ে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হল।”
এখনও আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেননি সোনালি। আর কোনওদিনও দিল্লি যাবেন না বলেও জানিয়ে দিলেন। এখনও তাঁর স্বামী, অন্যান্য সদস্যরা ফিরতে পারেননি। সেই উৎকন্ঠা তো এখনও রয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি বাকিদেরও ফেরাতে হবে।
প্রসঙ্গত কাজের সন্ধানে দিল্লিতে গিয়েছিলেন বীরভূমের পাইকরের বাসিন্দা সোনালি বিবি ও সুইটি বিবির পরিবার ৷ অভিযোগ, তাঁদের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও গত ১৭ জুন তাঁদের গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ ৷ শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য তাঁদের বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হয় ৷ সেই সন্দেহের বশে ২৬ জুন অসমের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ‘পুশব্যাক’ করে ছ’জনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয় ৷
সেই সময় সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন ৷ সেই থেকে তাঁরা বাংলাদেশে ছিলেন ৷ এদিকে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আটক করে ও মামলা রুজু করে ৷ একশো দিনেরও বেশি সময় তাঁরা স্থানীয় সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন ৷ সোমবার এই মামলায় সকলেই জামিন পেয়েছেন ৷
শীর্ষ আদালতে জল গড়ায়। সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দেয়, যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা সোনালি বিবিকে দিল্লি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তাই তাঁকে ও তাঁর সন্তানকে দিল্লিতে ফিরিয়ে আনা হবে ৷ সরকারের তরফে প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বাল এবং সঞ্জয় হেগড়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছেন, সোনালির স্বামী-সহ আরও অনেকে বাংলাদেশে আছেন ৷ তাঁদেরও ভারতে ফিরিয়ে আনা প্রয়োজন৷ তাঁদের জন্য সিলিসিটর জেনারেল আরও নির্দেশ চাইতে পারেন । কিন্তু কেন্দ্রের তরফে তুষার মেহতা বারবার দাবি করতে থাকেন, সোনালি বিবি ও বাকিরা বাংলাদেশি নাগরিক ৷ শুধু মানবিকতার খাতিরে কেন্দ্রীয় সরকার সোনালি বিবি ও তাঁর ছেলেকে ভারতে আনতে অনুমতি দিয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে এখনও জটিলতা সম্পূর্ণ কাটেনি।