Malda Murder Case: টানটান ৪ ঘণ্টা! শতদিন পেরিয়ে অবশেষে জেলা আদালতে প্রথম শুনানি হাড়হিম হত্যাকাণ্ডের
Kaliachak: গত অগস্ট মাসে কালিয়াচক হত্যাকাণ্ডে চার্জশিট জমা দিয়েছিল পুলিশ। বাবা, মা, ঠাকুমা এবং বোন; এই চারজনকে খুন করে গুদামে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠেছিল আসিফের বিরুদ্ধে।
মালদা: নিজের পরিবারের ৪ সদস্যকেই নিশৃংসভাবে হত্যা করেছিল কালিয়াচকের যুবক মহম্মদ আসিফ। হাড়হিম সেই হত্যাকাণ্ডের পর ৭০ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। তারও প্রায় একমাস পর অশেষে আজ, বৃহস্পতিবার মালদা জেলা আদালতে প্রথম শুনানি হল এই হত্যাকাণ্ডের (Malda Murder Case)।
এদিন, জেলা আদালতের সেশন কোর্টে কালিয়াচক-হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত আসিফের দাদা আরিফ মহম্মদের বয়ান শোনা হয়। মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় জানান, মূলত প্রধান সাক্ষী আরিফ মহম্মদের বিরুদ্ধেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ৪ ঘণ্টার টানা শুনানি চলে এদিন। লিপিবদ্ধ করা হয়েছে সাক্ষীর বয়ান। পরবর্তী শুনানির তারিখ ১১ নভেম্বর। তবে তদন্তের গোপনীয়তা রক্ষার স্বার্থে বিশেষ কিছু বলতে চাননি আইনজীবী।
গত অগস্ট মাসে কালিয়াচক হত্যাকাণ্ডে চার্জশিট জমা দিয়েছিল পুলিশ। বাবা, মা, ঠাকুমা এবং বোন; এই চারজনকে খুন করে গুদামে পুঁতে রাখার অভিযোগ উঠেছিল আসিফের বিরুদ্ধে। চারজনের দেহ উদ্ধার হওয়ার ৭০ দিনের মাথায় ২৭৩ পাতার চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। ধৃত আসিফের বিরুদ্ধে খুন-সহ তথ্যপ্রমাণ লোপাটের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, মোট ৪৪ জন সাক্ষীর বয়ান উল্লেখ রয়েছে এই চার্জশিটে। মামলার শুনানির জন্য স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর চেয়ে আদালতে আবেদন জানানো হয়। আদালত সেই আবেদনও মঞ্জুর করে। পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩০২, ৩০৭ এবং ২০১ ধারায় আসিফের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে সেই চার্জশিটে। মামলার বিচার হয়ে খুব শীঘ্রই সাজা ঘোষণা সম্ভব হবে বলেও আশা করছেন মালদা পুলিশের তদন্তকারী কর্তারা।
আসিফের মা-বাবার পোস্টমর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী, খুনের সময়ে আসিফের সঙ্গে তার মা-বাবার ধ্বস্তাধ্বস্তি হয়। প্রাণে বাঁচতে অচৈতন্য অবস্থাতেই ছেলের সঙ্গে তাঁদের প্রত্যক্ষ সংঘর্ষ হয়। কিন্তু যুঝতে পারেননি। ওই সময়েই আসিফ নিজের মা-বাবাকে গলা টিপে খুন করে। তার মা-বাবার গলায় শ্বাসরোধ করে খুন করার চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে।
কিন্তু যতবারই আসিফকে জেরা করা হয়, খুনের ঘটনার বর্ণনা দিতে বলা হয়, প্রতিবারই আসিফ জানায়, ওইদিন মা-বাবা-বোন-ঠাকুমাকে ঠাণ্ডা পানীয়ে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচৈতন্য করে দেয়। তারপর, বাড়ির সংলগ্ন গুদামঘরে চৌবাচ্চায় চুবিয়ে রেখে সেখানেই পাশে মাটি খুঁড়ে প্রায় জ্যান্ত মাটিতে পুঁতে দেয়। চুন, বালি, সুড়কি দিয়ে গেঁথে দেয় মেঝেও। কিন্তু শ্বাসরোধ করে খুন করার কথা একবারও স্বীকার করেনি আসিফ।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি মা-বাবা-বোন-ঠাকুমাকে খুন করে নিজের বাড়ির গুদামেই মাটিতে পুঁতে দেয় ধৃত ১৮ বছরের যুবক আসিফ মহম্মদ। এরপর গত জুলাই মাসে আসিফের দাদা আরিফের অভিযোগের ভিত্তিতে আসিফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। চলে জিজ্ঞাসাবাদ। তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা দেখেন শুধু খুন নয়, একাধিক অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত আসিফ। সময় যত গড়াতে থাকে, উঠে আসে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। এমনকী, আসিফের বাড়িতে নানা জায়গায় বেশ কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। যা রহস্যের জাল আরও ঘনীভূত করে। ঘটনায় আগেই আসিফের মামা শিস মহম্মদ, দাদা আরিফ মহম্মদ ও কাকা মর্তুজা আলীকে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল পুলিশ। যদিও, খুনের ব্যাপারে আসিফের মামা ও কাকা কিছুই জানতেন না বলে গোয়েন্দাদের জানিয়েছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: Crime: সমকামিত্বের জেরেই খুন, হনুমান-হত্যাকাণ্ডে ধৃতদের যাবজ্জীবনের ঘোষণা