
মালদহ: ‘টয়লেটটা পুরো খেয়ে নিয়েছে… আত্মসাৎ করেছে!’ চমকে উঠলেন তো! ইউরিন থেরাপির কথা জানেন তো? এরকম অনেক বিখ্যাত মানুষ রয়েছেন, যাঁরা নিয়মিত ইউরিন থেরাপি করতেন! ভারতীয় সংস্কৃতি অনুযায়ী, তাঁদেরকে অনেকে বলতেন শিবাম্বু! কিন্তু একটা আস্ত টয়লেট খেয়ে নেওয়ার অভিযোগ তুলল বিজেপি। আর তা নিয়েই শোরগোল মালদহে। বিজেপি-র দক্ষিণ মালদহ জেলা সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল এহেন অভিযোগ করেছেন।
মূল অভিযোগ, টয়লেট নির্মাণের কয়েক লক্ষ টাকা হজম করে ফেলেছে তৃণমূল। এমনই অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। আর সেই অভিযোগ করতে গিয়েই এমন বক্তব্য। মালদহের মানিকচকের এনায়েতপুর হাইস্কুলের টয়লেট নির্মাণের টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অভিযোগ, একটি ইটও গাঁথা হয়নি। অথচ সরকারি টাকা হজম হয়ে গিয়েছে। শুধু বিজেপি বলছে না, এনায়েতপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষকও এই একই অভিযোগ করছেন।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক বদরুৎজামান সাহেব বললেন, “আমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক, কিন্তু আমি কেন, স্কুলের কেউই জানে না এখানে নাকি এনায়েতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত একটি কমিউনিটি টয়লেট তৈরি করেছে। আর তার বিল পাশও হয়ে গিয়েছে। কিন্তু স্কুল ক্যাম্পাসের কোথাও গিয়ে কমিউনিটি টয়লেট খুঁজে পাবেন না। আমি বিডিও-কে লিখিতভাবে অভিযোগ জানিয়েছি। ”
অভিযোগ, ভুয়ো বিল বানিয়ে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছে পঞ্চায়েত। যদিও এনায়েতপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তপতী মণ্ডলের বক্তব্য, “আমাদের পঞ্চায়েত থেকে টয়লেট দেওয়া হচ্ছিল। ওই স্কুলের টয়লেটের অবস্থা খুবই জরাজীর্ণ ছিল। ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধা হচ্ছিল। আমরা ওর পাশেই টয়লেট করে দিই। জায়গাগত কিছু সমস্যা ছিল। কিন্তু টয়লেট ভালভাবেই হয়ে গিয়েছে।”
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানাচ্ছেন, টয়লেটের জন্য একটা বিল আছে ২ লক্ষ ৬৭ হাজার ৮১৭ টাকা। আরেকটা বিল ২৩ হাজারের মতো। দুটো মিলিয়ে ২ লক্ষ ৯১ হাজার ৮০১ টাকার বিল হয়েছে। যদিও প্রধানের বক্তব্য, “যে অভিযোগটা হচ্ছে, সেটা সত্যি নয়। পাশের স্কুলে টয়লেট হয়েছে, কাজটা ভালভাবেই হয়েছে।” যদিও প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, “যদি ওরা জায়গা পরিবর্তনও করে, তাহলে তো বিলটা তৈরি করার সময়ে সেই নামটাই দেওয়া উচিত ছিল। আমার স্কুলের নাম তবে কেন দিল? আমার কাছ থেকে কোনও কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার সার্টিফিকেটও নেননি ঠিকাদার। তার মানে তিনি অন্য জায়গা থেকে সার্টিফিকেট নিয়েছেন। সেটা গ্রাম পঞ্চায়েতকে দিয়েছেন, তারপরই তো বিল হয়েছে।”
অর্থাৎ যে স্কুলে টয়লেট তৈরি হওয়ার কথা ছিল, সেই স্কুল পেল না, পেল পাশের স্কুল। আর তাতেই কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপি-র দক্ষিণ মালদহ জেলা সম্পাদক গৌরচন্দ্র মণ্ডল বলেন, “পুরো টয়লেটটাই খেয়ে ফেলেছে ওরা। কাজ না করে টাকা উধাও। এরা টয়লেটটাও খায়।”