
মালদহ: ভোট পরর্বতী হিংসার শিকার বিজেপি সমর্থক পরিবারের নয় বছরের নাবালিকাকে ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন। সিবিআই এর তদন্তাধীন পকসো মামলায় রাজ্যে এই প্রথম অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল জেলা আদালত। অভিযোগ, চার বছর আগে চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন এলাকার প্রভাবশালী এক তৃণমূল নেতা, যিনি আবার অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক।
মালদহ অতিরিক্ত নগর দায়েরা আদালতের দ্বিতীয় (এডিজে ২ কোর্ট) বিচারক রাজীব সাহা অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাকে দোষী সাব্যস্ত করেন। আগামী শুক্রবার মামলার সাজা ঘোষণা হবে। বিধানসভা ভোট পরবর্তী হিংসায় হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআইয়ের দায়ের করা মামলায় রাজ্যে এই প্রথম সাজা ঘোষণা হল। আদালত চত্বরে দাঁড়িয়ে দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি জানায় নির্যাতিতার পরিবার। এদিকে এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়েছে। মালদহের একটি ব্লকে (মানিকচক) ২০২১ সালের ৫ জুন ঘরের বাইরে খেলাধুলো করার সময় চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে ফাঁকা ঘরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন ওই ব্লকেরই এক স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক তথা তৃণমূল নেতা রফিকুল ইসলাম।
অভিযোগ, নির্যাতিতার পরিবার বিজেপি সমর্থক হওয়ায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই অভিযুক্ত নাবালিকা মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন ওই তৃণমূল নেতা রফিকুল ইসলাম। পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। ওই বছর সেপ্টেম্বর মাসে জেলা সফরে আসেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগের মামলায় দায়িত্বভার নেয় সিবিআই। একই সঙ্গে রাজ্যে সিবিআই মোট ৫৫টি মামলার দায়িত্বভার নেয়। তারমধ্যেই এবার প্রথম ধর্ষণের মামলায় সাজা ঘোষণা হচ্ছে বলে জানান, সিবিআই পক্ষের আইনজীবী অমিতাভ মৈত্র।
আইনজীবী বলেন,“সিবিআই হাইকোর্টের নির্দেশে ভোট পরবর্তী রাজ্যে হিংসায় মোট ৫৫টি মামলার দায়িত্বভার নেয়। তার মধ্যে মালদহের ধর্ষণের মামলাটিও রয়েছে। এ দিন পকসো আইনে ২২ জন সাক্ষীর ভিত্তিতে বিচারক অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। শুক্রবার সাজা ঘোষণা হবে। আমরা সর্বচ্চ সাজার দাবি জানাব।”
নির্যাতিতার মা বলেন,“মেয়ে বাড়ির সামনে খেলা করছিল। তাকে ফুঁসলে ঘরে নিয়ে গিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি ধর্ষণ করে। বিধানসভা ভোটে বিজেপি করার কারণে আমাদের শাস্তি দেওয়া হয়।”
জানা গিয়েছে, মেয়েটি এখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। অভিযুক্ত ঘটনার পর থেকে এখনও জেল হেফাজতেই রয়েছে। প্রথমে তিনি সিপিএম করতেন। পরে তৃণমূলে যোগ দেন, দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক।