
মালদহ: মিম আতঙ্কে তৃণমূল। মিম ‘ভূত’ ছাড়াতে ইমাম মোয়াজ্জেমদের নিয়ে সভা তৃণমূলের। মালদহের বেশ কিছু আসনে একেবারে সরাসরি লড়াইয়ে মিম। ইতিমধ্যেই জেলা জুড়ে তৃণমূল ছেড়ে সংখ্যা লঘুদের মিমে যোগদানের হিড়িক। পাশাপাশি সংগঠন মজবুত করতে একের পর এক পার্টি অফিস খুলে চলেছে মিম। ইতিমধ্যেই ২০ টির বেশি নিজেদের কার্যালয় খুলে ফেলেছে মিম। মালদহ জেলার তৃণমূল স্তরে ঢুকে বড় ভাঙন ধরাচ্ছে তৃণমূলের। যা মালদহের গঙ্গা ভাঙনের থেকেও বড় ধাক্কা তৃণমূলের কাছে।
এমন কি নিজের বিধানসভা কেন্দ্র মালতীপুরই না হারায় এই আতঙ্কে স্বয়ং স্বয়ং মালদহেরর জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী।তাই ভাঙনের ধাক্কা সামলাতে, সংখ্যা লঘুদের আস্থা ফেরাতে নিজের বিধানসভা কেন্দ্র মালতীপুরের জালালপুরে ইমাম মোয়াজ্জেমদের নিয়ে সভা করলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি। মঞ্চ থেকে সরাসরি হলেন মিম আর হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে। সতর্ক করলেন ইমাম মোয়াজ্জেমদের।
তিনি বলেন, “আলখাল্লা পরে মুসলিমদের হয়ে যারা বলছে তারা আসলে মুসলিমদের ভালো চায় না। তাদের ফাঁদে যাতে তারা পা না দেন।” মালদহের মালতীপুর, রতুয়া, চাঁচল,হরিশ্চন্দ্রপুর, সুজাপুর, মোথাবাড়ি, মানিকচকে সংখ্যা লঘুদের যে হারে মিমের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে এবং মিম যেভাবে সংগঠন মজবুত করছে তাতে মনে হচ্ছে না।
মোথাবাড়ি বিধানসভা এলাকায় বিধায়ক মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সেখানেও তৃণমূলে ব্যপক ধস। তিনশোর বেশি তৃণমূল কর্মী যোগদান মিমে। রতুয়া বিধানসভাতেও একই রকম সংখ্যায় তৃণমূল ছেড়ে মিমে যোগদান। হরিশ্চন্দ্রপুর বিধানসভার বিধায়ক তজমুল হোসেনও মন্ত্রী। সেখানেও মিমে পর পর যোগদান করেছেন। একইভাবে তৃণমূল জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সীর বিধানসভা কেন্দ্র মালতীপুরেও তীব্র ভাঙন রয়েছে তৃণমূলে।
একদিকে, মুর্শিদাবাদে মিমের সঙ্গে জোট বাঁধছেন হুমায়ুন কবীর। সেক্ষেত্রে সেখানেও ভোট কাটাকুটির একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কেবল ভরতপুরের বিধায়ক কেন, ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীরও নিজেই স্বীকার করেছেন, আসাউদ্দিন ওয়াইসির একটা আলাদাই ক্যারিশ্মা রয়েছে। সুতরাং বিশ্লেষকরা বলছেন, এতে বেশ খানিকটা ভাল প্রভাব বাংলাতে পড়তেই পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত কয়েক মাস ধরেই মালদহের সমীকরণটা বদলে যেতে শুরু করেছে। সন্ধ্যা নামলেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছেন মিমের প্রতিনিধিরা। মালদহের ১২টি বিধানসভার প্রত্যেকটিতেই প্রার্থী দেবে বলে জানিয়েছে মিম। এর মধ্যে সাতটি বিধানসভায় বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। আর সেই বার্তা নিয়েই সংখ্যালঘুদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন মিমের প্রতিনিধিরা। আর সেই ‘ভূত’ই তাড়া করে বেড়াচ্ছে তৃণমূলকে।