Malda: ‘এখন আমি তো পুরো নিঃস্ব…’, জীবিত স্ত্রীর শ্রাদ্ধ করে লোক খাইয়ে বললেন স্বামী! নেপথ্যে করুণ সত্যি, ভাবতেও পারবেন না
Malda: ওই ব্যক্তির নাম অচিন্ত্য রায়। তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পরাশটলা গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ ১৯ বছর ঘর করে প্রেমিকের সঙ্গে চলে গিয়েছেন। যাওয়ার সময়ে অজুহাত দিয়ে গিয়েছেন, বিয়ের এত বছর পরও কোনও সন্তানদি হয়নি তাঁর।

মালদহ: নিজের জীবিত স্ত্রীর মুখাগ্নি, দাহ সৎকার, শ্রাদ্ধ সবই করলেন স্বামী, সব কিছুই রীতি রেওয়াজ মেনেই। শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সাক্ষী থাকল গোটা গ্রাম। স্ত্রীর কুশপুতুল বানিয়ে তা কাঁধে নিয়ে হরিনাম সংকীর্তন করতে করতে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিয়ম রীতি আচার মেনে মুখাগ্নি-সহ সব কাজ করে, দেহ দাহ করা হয়। সঙ্গে ছিলেন শ্মশান বন্ধুরাও। এরপরে নিয়ম মেনে মস্তক মুন্ডন, শ্রাদ্ধশান্তি। পেটপুরে খাওয়ানো হল গ্রামবাসীদের। ঘটনা মালদার হরিশ্চন্দ্রপুরে। কিন্তু কেন এত কাণ্ড?
জানা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তির নাম অচিন্ত্য রায়। তিনি হরিশ্চন্দ্রপুর ১ নম্বর ব্লকের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের পরাশটলা গ্রামের বাসিন্দা। স্ত্রী তাঁর সঙ্গে দীর্ঘ ১৯ বছর ঘর করে প্রেমিকের সঙ্গে চলে গিয়েছেন। যাওয়ার সময়ে অজুহাত দিয়ে গিয়েছেন, বিয়ের এত বছর পরও কোনও সন্তানদি হয়নি তাঁর। একলা স্বামী তাই স্ত্রী-র পরলোকে গিয়েছেন, এই ভাবনা নিয়েই এত কিছু করলেন!
অচিন্ত্য পেশায় রাজ মিস্ত্রি। নিঃসন্তান দম্পতি। উনিশ বছর আগে বিয়ে হয় অচিন্ত্যর। কিন্তু একসঙ্গে উনিশটা বছর কাটানোর পর, অভিযোগ, প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যান স্ত্রী। এমনকি প্রেমিকের সঙ্গে রিলস বানিয়ে স্বামীকে দেখানোর চেষ্টা করেন, ফেসবুকে ট্যাগ করেন। হোয়াটসঅ্যাপে স্বামীকে সেই রিলস শেয়ার করেন। এতে স্বামীর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বলে অভিযোগ।
অচিন্ত্যর দাবি, স্ত্রীর এই ধরনের কাজে পরিবারের সম্মান নষ্ট হয়েছে। তাই স্ত্রীকে মৃত বলে ঘোষণা করে তাঁর আত্মার শান্তির জন্য শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করেন। স্বামী ও পরিবারের সদস্যরা মঙ্গলবার হিন্দু রীতি অনুযায়ী শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। পুরোহিত মন্ত্র পাঠ করেন, গ্রামবাসীদের পাশাপাশি আত্মীয় স্বজনদের জন্য খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, আগামী দিনে যাতে গ্রামে এই ধরনের আর কোনও ঘটনা না ঘটে তাই এই কাজ।
অচিন্ত্য বলেন, “পরিবারে কোনও অশান্তি ছিল না। তবে সন্তান না হওয়ার একটা দুঃখ ছিল। রাজমিস্ত্রি করে যা ইনকাম করতাম সমস্তটাই স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে জমা রাখতাম। স্ত্রী গভীর রাত থেকে ফোনে কথা বলত, তখনই বুঝতে পারি। তখন একাধিকবার বারণও করেছিলাম। শ্বশুরবাড়িতে জানিয়েছিলাম। এদিন আমি কাজ করতে বাইরে গিয়েছিলাম। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখি স্ত্রী বাড়িতে নেই। সমস্ত নতুন কাপড়, বিয়ের গয়না ও ব্যাঙ্কে রাখা চল্লিশ হাজার টাকা-সহ আমার জীবনের সমস্ত ইনকাম নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে। থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি। এরপর প্রেমিকের সঙ্গে ফেসবুকে রিলিস তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে আমাকে জানানোর চেষ্টা করে। এখন আমি তো পুরো নিঃস্ব হয়ে গিয়েছে। আমার আর কিছুই রইল না।”





