মালদহ: কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছিল বধূর ওপর চরম অত্যাচার। এরই আবারও অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন বধূ। পুনরায় কন্যা সন্তানেরই জন্ম দেবে, এই আশঙ্কায় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ। পরে প্রমাণ লোপাট করতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় দেহ। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে। মূল অভিযুক্ত বধূর শ্বশুর, শাশুড়ি আর ননদ পলাতক। আরও অভিযোগ, প্রমাণ লোপাট করতে ময়নাতদন্ত না করেই দেহ কবর দিয়ে দেওয়া হয়। সেই দেহ পুনরায় তুলে শেষকৃত্য করার দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হন বধূর মা। খবর জানাজানি হতেই পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ময়নাতদন্তের পর আবার সেই দেহ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। সমস্ত ঘটনাই হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় লিখিত আকারে দায়ের করা হয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাংরুয়া গ্রামে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শাশুড়ি সুলতানা খাতুন ও ননদ মুসকান খাতুন পলাতক রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর তিনেক আগে কাটিহার জেলার আজিম নগর থানার চান্দপুর গ্রামের বাসিন্দা নাজির আলমের মেয়ে রেশমা খাতুনের বিয়ে হয় নুরুল আলির ছেলে সুভান আলির সঙ্গে। বিয়ের সময় নাজির আলম সাধ্যমতো দামী সামগ্রী ও পণ দিয়েছিলেন। তবে পাত্র পক্ষ আরও দু’লক্ষ টাকা দাবি করেছিল। কিন্তু পরিযায়ী শ্রমিক বাবার পক্ষে ওই টাকা দেওয়া সম্ভব হয়নি। বিয়ের পর থেকেই টাকার জন্য রেশমার ওপর অত্যাচার চলত বলে অভিযোগ পরিবারের।
বিয়ের বছর খানেক পর রেশমা এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। অভিযোগ, মেয়ের জন্ম দেওয়ার পর অত্যাচার আরও বাড়তে থাকে। বাবার বাড়ি থেকে দুই লক্ষ টাকা নিয়ে আসার জন্য আরও বেশি চাপ দিতে থাকেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা।
রেশমার মা জাকেরা খাতুন জানান, মেয়ের জন্ম দেওয়ার পর থেকেই অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল। এরই মধ্যে রেশমা আবার পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। অভিযোগ, মেয়ে হবে এই আশঙ্কা থেকেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বামী,শ্বশুর ও দেওর তাঁকে খুন করেন বলে অভিযোগ। এরপর দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগ, পরিবারকে না জানিয়েই দেহ কবর দিয়ে দেওয়া হয়। পরে মেয়ের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে দেহ তুলে ময়নাতদন্ত করে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।