মালদহ: পাঁচ বছরের সম্পর্ক। প্রথমে বন্ধুত্ব, তারপর ঘনিষ্ঠতা। তাতে গর্ভবতী হয়ে পড়েন স্নাতকোত্তর তরুণী। কিন্তু তারপর জানতে পারেন প্রেমিকের অন্য কারোর সঙ্গে তো ‘রেজিস্ট্রি ম্যারেজ’ আগেই হয়েছে। তারপরই চরম সিদ্ধান্ত তরুণীর। ফেসবুকে নিজেদের ঘনিষ্ঠতার ছবি পোস্ট করে আত্মঘাতী তরুণী। বাড়ির পাশের বাগানে গাছ থেকে তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল মালদহের মানিকচকে। অভিযুক্ত যুবক প্রাক্তন মন্ত্রী, বিধায়িকা সাবিত্রী মিত্রের আত্মীয় বলে জানা গিয়েছে। তাঁর দাদা আবার জেলা তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক।
জানা গিয়েছে, মালদহের চাঁচল কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেছিলেন ওই তরুণী। তারপর বিএড পড়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। অভিযুক্ত যুবক তাঁর পাশের গ্রামেই থাকেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে ওই যুবকের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তাঁর। প্রথমে বন্ধুত্ব ছিল। পরে তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠতা হয়। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওই যুবক। তাঁর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক হয়েছিল যুবতীর। তাতে গর্ভবতী হয়ে পড়েন তিনি।
ওই যুবককে তিনি গোটা বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তিনি বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। অভিযোগ, তারপর থেকেই নানাভাবে ওই যুবতীর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে শুরু করেছিলেন ওই যুবক। যাতে যুবতী নিজেই সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসতে পারেন। কিন্তু তা না হওয়ায় ওই যুবতীকে ছেলের বাড়ির লোক ডেকে পাঠান। তাঁকে নানাভাবে
অপমান করা হয় বলে অভিযোগ।
বাড়ি ফিরে নিজের ফেসবুক পেজে গোটা বিষয়টি লেখেন ওই যুবতী। সম্পর্কের সত্যতা প্রমাণের জন্য বেশ কিছু ছবি আপলোড করেন। পরের দিন সকালে যুবতীকে তাঁর বাড়ির পাশের বাগান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। মানিকচক থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে যুবতীর পরিবারের পক্ষ থেকে। পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
মৃতার মা বলেন, “ওর বাবাও রাতে বারবার উঠে দেখেছে। দেখেছে বসেই রয়েছে এক জায়গায়। বলছিলাম ঘুমিয়ে পড়তে। কিন্তু যাইনি শুতে। সকালে উঠে দেখি এই ঘটনা।” অভিযুক্তের বাড়ির সদস্যরা ঘটনার পর থেকে পলাতক। এই ঘটনায় তৃণমূলের পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রও অভিযুক্তকে নিজের আত্মীয় বলতে অস্বীকার করেছেন।