মালদহ: তরুণীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মানসিক নির্যাতন। তারপর লক্ষ-লক্ষ টাকা আদায়। মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী তরুণী। গুরুতর এমনই অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনায় তরুণীর বোন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মালদহের ইংরেজবাজার থানায়।
মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, ওই তরুণী বিবাহিত। তাঁর এক কন্যা সন্তানও রয়েছে। পেশায় তিনি সংগীত শিল্পী। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে স্বামীর সঙ্গে সুসম্পর্ক না থাকার জেরে আলাদা থাকতে শুরু করেন তাঁরা। এরই মধ্যে ফেসবুকে অভিযুক্তের সঙ্গে তাঁর আলাপ ও ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। বাড়িতেও আসা যাওয়া শুরু হয় অভিযুক্তের। পরিবারের দাবি, এই সব কয়েকদিন চলার পর নিজের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল করে দেবে বলে ব্ল্যাকমেইল করা শুরু করেন তরুণীকে। ১০ লক্ষ টাকা নেন তাঁর থেকে। তারপরও ছবি ভাইরালের হুমকি দেয় অভিযুক্ত। তরুণীর পরিবারের দাবি, অপমানে-লজ্জায় বাধ্য হয়ে শুক্রবার আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তিনি। এ দিকে, দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় থাকাকালীন মুর্শিদাবাদ থেকেই মালদায় চলে আসেন অভিযুক্ত। তাঁর দাবি, তরুণী যে আত্মঘাতী হবে আগে থেকেই জানতেন তিনি। তিনিই দেহ নামান। সিসিটিভি ফুটেজেও সেই ছবি রয়েছে। পরে দেহ নামিয়েই তরুণীর দু’টি মোবাইল নিয়ে চম্পট দেয় অভিযুক্ত। আজ ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তরুণীর দিদি।
ইংরেজবাজার থানায় মৃতের পরিবার যে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে সেখানে তাঁরা জানিয়েছেন, ‘তরুণীর স্বামী পাঁচ বছর আগে নিজের স্ত্রী ও তেরো বছরের কন্যাকে রেখে চলে যান। তরুণী পেশায় গায়িকা। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে গান গাইতেন। সেই সুবাদেই অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে আলাপ হয়। ফেসবুকের মাধ্যমে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। অভিযুক্ত যুবক সন্তান সহ তরুণীকে বিয়ে করতেও রাজি ছিলেন। এরপর নিজের ব্যবসার জন্য দশ লক্ষ টাকা দাবি করেন। সেই টাকা দিয়েও দেন। পরবর্তী সময়ে তরুণী বিয়ের কথা বললে অভিযুক্ত টালবাহানা করে। শুধু তাই নয় তাঁকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করতেও বলেন। এতে রাজি না হওয়ায় সম্পর্কে চিড় ধরে। তারপরই অভিযুক্ত যুবক ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি সোশ্য়াল মিডিয়ায় ভাইরাল করার হুমকি দিতে থাকে।’
মৃতের বোন বলেন, “আমার অনুমান ওই ছেলেটার ফোনে দিদির কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ছিল। সেটা দেখিয়ে ওকে ব্ল্যাকমেইল করছিল। আমার দিদি ওকে টাকা পয়সা পাঠাত। সোনার গহনা বন্ধক রেখে দিদি সেই টাকাও দিয়েছিল। আমি চাই আমার দিদি যার জন্য মারা গিয়েছে তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।”