মালদহ: বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে রাজ্যে। তাই বলে রোগী চুরি! এবার উঠল এমনই অভিযোগ। মালদহে ‘চুরি’ যাচ্ছে রোগী। হাসপাতাল থেকে সোজা নিয়ে গিয়ে তোলা হচ্ছে নার্সিংহোমে। ধরানো হচ্ছে মোটা টাকার বিল। জেলা প্রশাসনের দাবি, তারা এই বিষয়টা নিয়ে তৎপর ও উপযুক্ত ব্যবস্থাও নিয়েছে।
সরকারি হাসপাতালে রেফার করা রোগীকে না জানিয়েই অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার নিয়ে গিয়ে তুলছে বেসরকারি নার্সিংহোমে। এমন অভিযোগ তুলেছেন একাধিক রোগীর পরিবারের সদস্যরা। ভুল বুঝিয়ে ভর্তি করিয়ে মোটা টাকা বিল ধরানো হয়েছে তাঁদের। অভিযোগ, নার্সিংহোম থেকে মোটা অঙ্কের কমিশন যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভারের কাছে। পরিকাঠামোহীন নার্সিংহোমে চিকিৎসার নামে প্রহসন চলছে। আর তারই শিকার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা আদিবাসী পরিবারগুলি।
অভিযোগ সামনে আসার পর স্বাস্থ্য দফতর এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক রোগীকে নার্সিংহোমে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। সেই নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে আইনি প্রক্রিয়া।
গাজোল থানার আলাল পাহাড়িভিটা এলাকার বাসিন্দা কুমার কোরা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে চলতি মাসের ১৭ তারিখে গাজোল হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখান থেকে তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। অভিযোগ, যে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই রোগীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তার চালক পরিবারের সদস্যদের বোঝান, মালদহ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা হয় না। এ কথা বলে বেসরকারি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। এরপর সেখানে কার্যত ওই রোগীকে আটকে রেখে স্বাস্থ্যের নামে ব্যবসা শুরু করে সেই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ বলে অভিযোগ।
প্রায় এক লক্ষ টাকার ওপর বিল করা হয়। এরই মধ্যে খবর পেয়ে স্বাস্থ্য দফতরের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই রোগীকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে। বিরোধীদের দাবি, গোটা রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। একই অবস্থায় মালদহেও। স্বাস্থ্যকর্মীরা প্রতারক হিসেবে কাজ করছে বলে দাবি বিজেপির। হেল্থ সার্ভিলিয়েন্স টিম নার্সিংহোমে গিয়ে কথা বলেছে।
মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক শেখ আনসার আহমেদ বলেন, “যেভাবে এক রোগীকে নার্সিংহোম থেকে নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তা থেকেই স্পষ্ট প্রশাসন কতটা তৎপর।”