মালদহ: কাটিহারে প্রবল অঘটনের মুখে রাহুল গান্ধী। ভেঙে চুরমার গাড়ির কাচ। ঘটনাচক্রে এদিনই মালদহে জেলা সফরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাহুল গান্দীর গাড়িতে হামলা চালাল কে? সে প্রশ্নে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি! আর কংগ্রেসের অবস্থান? উত্তরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি চৌধুরী বললেন, ‘আমি কীভাবে বলব, আমি তো গাড়িতেই ছিলাম।’ কিন্তু তারপরেই অধীরের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘বুঝে নিন, কে ভাঙতে পারে।’ সঙ্গে বললেন, “বাংলার সংস্কৃতি অতিথি দেব ভব। আমরা কাউকে অবজ্ঞা করি না অতিথি অ্য়াপায়নের ক্ষেত্রে। প্রতি পদে হামলা হচ্ছে। কোচবিহার থেকে শুরু হয়েছে এটা। তাঁকে সভা করতে না দেওয়া, বলতে না দেওয়া-যত রকমের বিরোধিতা করা সম্ভব সব হচ্ছে।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, অধীর চৌধুরী তির ছুড়লেন প্রশাসন কথা রাজ্য সরকারের দিকেই। জায়গার নাম উল্লেখ করে বুঝিয়ে দিলেন, বিহার নয়, বাংলায় ন্যায় যাত্রা ঢুকতেই একের পর এক অনাকাঙ্খিত ঘটনার সম্মুখীন হতে হচ্ছে রাহুল গান্ধীকে। অধীরের কথায় উঠে এল, বঙ্গে রাহুলের থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে জটিলতা। অধীর চৌধুরীর নিশানায় তৃণমূল। যদিও এক্ষেত্রে মুখে নাম নেই। তবে তিনি বললেন, “অধীর চৌধুরীর জন্যই কী রাহুলের পদযাত্রায় বাধা, প্রশ্ন তুললেন অধীর। এটা হলে নির্বিঘ্নে রাহুলের পদযাত্রার জন্য সরে আসব। এটা রাহুল গান্ধীর পদযাত্রা। এটা কংগ্রেস পরিবারের পদযাত্রা। তাঁদের দৌলতে আজ কেউ নেত্রী।”
এদিন রাহুল গান্ধীর গাড়িতে হামলার পিছনে মুখ খুললেন বটে অধীর। রাজ্য সরকার, প্রশাসনকে বিঁধলেও, তবে একবারও তৃণমূল কিংবা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের নাম নিলেন না। আরও উল্লেখ্য, ঘটনার পরপরই সাংবাদিক বৈঠক করলেন রাহুলের ন্যায় যাত্রার সর্বক্ষণের সঙ্গী জয়রাম রমেশ। রাজনৈতিক মহল মনে করেছিল, এক্ষেত্রে হয়তো এই হামলা নিয়েই আক্রমণাত্মক হবে তিনি। কিন্তু না অত্যন্ত সচেতন ভাবে তৃণমূল কিংবা নেত্রীর নাম এক্ষেত্রেও এড়িয়ে গেলেন তিনি। জয়রাম বললেন, “পথ আলাদা হলেও, আমাদের লক্ষ্য এক।” রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, তবে কি জোট ধর্ম পালন করতে গিয়েই রক্ষণাত্মক কংগ্রেস?
কংগ্রেস নেতৃত্ব ক্ষোভে ফুঁসছে। বারবারই বলছেন, বাংলায় VVIP নেতাও সুরক্ষিত নন! যদিও বাংলার কংগ্রেস নেতা সৌম্য আইচ সরাসরি বললেন, “একটা ফ্যাসিস্ট সরকার দাঁত-নখ সব বার করে দিয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রা। এবার বুঝে নিন বিজেপির সঙ্গে রয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার। রাহুল গান্ধীর ন্যায় যাত্রার নিরাপত্তায় সব পুলিশ তুলে দিয়ে সিভিক ভলান্টিয়র দেওয়া হয়েছে। তাঁকে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না, খেতে দেওয়া হচ্ছে না।” যদিও মালদহের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিনও স্পষ্ট করে দেন, ‘বাংলায় জোটের কোনও প্রশ্নই নেই। একাই লড়ব।’