
মালদহ: আরজি করে ছাত্রী মৃত্যু ঘিরে রহস্য এখনও কাটেনি। শনিবার মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্ত মিটলেও, রিপোর্ট এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। গতকাল রাতেই এই ঘটনায় যুক্ত একমাত্র অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ। শনিবার রাত থেকে শুরু হয় জেরা। সূত্রের খবর, টানা ৯ ঘণ্টা জেরার পর রবিবার অনিন্দিতা সোরেনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত তথা প্রেমিক উজ্জ্বল সোরেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভারতীয় ন্য়য় সংহিতার ৬৯ বা বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস, ১০৩-র ১ বা খুনের অভিপ্রায়, ১২৩ বা বিষ খাইয়ে খুন, ৩৫১-র ২ বা খুনের ষড়যন্ত্র এবং ৮৯ বা জোর করে গর্ভপাতের মামলা রুজু করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ। পাশাপাশি, এদিনই তাকে মালদহ জেলা আদালতে পেশ করে পুলিশ। আপাতত সাতদিনের হেফাজতের আর্জি জানিয়েছে তারা।
কিন্তু সারারাত ধরে কী কী প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে অভিযুক্ত উজ্জ্বল সোরেনকে? মেয়ের মৃত্যুর পর থেকেই নানা ভাবে অভিযুক্তের দিকেই পরিকল্পনামাফিক খুনের অভিযোগ তুলেছে মা আলপনা টুডু। মেয়েকে ওষুধ খাইয়েই খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। সূত্রের খবর, পুলিশি জেরাতেও উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গগুলি। আর তার ভিত্তিতেই অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, অভিযুক্ত উজ্জ্বল সোরেনও ডাক্তারি পডু়য়া। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেই তিনি পড়াশোনা করছেন। বাড়ি পুরুলিয়ায়। অনিন্দিতার মৃত্যু ঘিরে যখন তোলপাড় পরিস্থিতি, সেই সময় থেকেই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না উজ্জ্বলের। পরে শনিবার রাতের দিকে ফোনের লোকেশন ট্র্যাক করে তাঁকে আটক করে পুলিশ। নিহতের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক বলেই জানিয়েছিলেন অনিন্দিতার মা আলপনা টুডু। তাঁর কথায়, ‘দিনকয়েক আগে কাউকে না জানিয়ে পুরীর মন্দিরে গিয়ে বিয়ে দু’জনে বিয়ে করেছেন। এরপর অনিন্দিতা অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। তারপরই অনিন্দিতা, উজ্জ্বলকে সামাজিক বিয়ে বা রেজিস্ট্রি করে বিয়ের জন্য জানায়। কিন্ত উজ্জ্বল রাজি হয় না। ফলত, অনিন্দিতা গর্ভপাত করিয়ে নিতে হয়।’
নিহতের মায়ের সংযোজন, ‘গত সোমবার মালদহে উজ্জ্বলের সঙ্গে দেখা করতে আসে সে। তারপর এখানেরই একটি হোটেলে ওঠে। সেখানেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ওঁ। মালদহে মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু আমাদের কাছে ফোন আসে শুক্রবার। জানান হয়, মেয়ে অসুস্থ। পরে কলকাতা নিয়ে যেতে গিয়েই মৃত্যু হয় ওঁর। কিছু একটা ওষুধ খাইয়েই খুন করা হয়েছে।’