মালদহ: নন্দীগ্রামের ভোট তিনি দারুণ উপভোগ করেছেন। মমতা বনাম শুভেন্দুর লড়াইকে এভাবেই কটাক্ষ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী (Adhir Choudhury)। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে তাঁর মন্তব্য, “দেখতে দেখতে আমার মনে হচ্ছে দুনিয়া গোল। যারা আমাকে হারাতে এসে ছিল তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে।”
২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের তিন মাস আগেই প্রথম তৃণমূল প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেদিন যাঁকে তিনি নিজের সৈনিক করে ভোটের ময়দানে নামিয়েছিলেন সেই শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)-র বিরুদ্ধে একুশের ভোটে লড়তে হচ্ছে তৃণমূল নেত্রীকে। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে দিনভর সবার নজরে ছিল এই কেন্দ্র। সেই যুদ্ধ তিনিও দারুণ উপভোগ করলেন বলে টিপ্পনি অধীর চৌধুরীর।
অধীরের কথায়, “২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে আমাকে হারানোর জন্য মমতা ব্যানার্জি সেনাপতি নিয়োগ করেছিল শুভেন্দু অধিকারীকে। মুর্শিদাবাদ পঞ্চায়েত, মিউনিসিপালিটি গায়ের জোরে দখল করেছিল। মানুষের সাধারণ অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল।” আর এসবই মমতার নির্দেশে শুভেন্দু করেছিলেন বলে দাবি বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের। তিনি যোগ করেন, মমতা ব্যানার্জির নির্দেশেই সেদিন শুভেন্দু অধিকারী মুর্শিদাবাদ দখল করতে চেয়েছিল। এখন সেই শুভেন্দু অধিকারী মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে নন্দীগ্রামে নির্বাচনে লড়ছে। এর পরেই অধীরের কটাক্ষ, ‘এদিনের লড়াই দেখতে দেখতে মনে হচ্ছে দুনিয়া গোল। যারা আমাকে হারাতে এসেছিল তারা এখন নিজেদের মধ্যে মারামারি করছে।’
তখন শুভেন্দু তৃণমূলে। দলীয় পর্যবেক্ষকের দায়িত্বের অধিকারী শুভেন্দু পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রাক্কালে কংগ্রেস বিধায়ক শাওনি সিংহ রায় ও অপূর্ব সরকারকে নিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলে। এর পর মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জুড়ে কার্যত কংগ্রেসে ভাঙন ধরিয়েছিলেন অধুনা বিজেপি নেতা। বার্তা দিয়েছিলেন, মুর্শিদাবাদ থেকে কংগ্রেসকে নিশ্চিহ্ন করে দেবেন। এর পর ‘১৯ এর লোকসভা ভোট। নিজের গড় বাঁচাতে ভোটের দিন মরিয়া প্রচেষ্টা করতে দেখা গিয়েছিল অধীরকে। সেদিনের সেই লড়াইকে স্মরণ করে এদিন মমতা বনাম শুভেন্দুর লড়াইকে কটাক্ষ করলেন অধীর।
অধীর বলেন, মমতা ব্যানার্জি আজ নৈতিকভাবে পরাজিত। তাই আজ সোনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখতে হয়েছে তাঁকে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে কংগ্রেসের সঙ্গে থাকতে হবে বুঝেছেন তিনি। মমতা ব্যানার্জির ‘বোধোদয়’ হয়েছে বলে টিপ্পনি করেন কংগ্রেস নেতা। তাঁর কথায়, “একটা সময় কংগ্রেস মুক্ত পশ্চিমবঙ্গ করার কথা মনে হয়েছিলো। আজ বুঝেছেন কংগ্রেস ছাড়া গতি নাই।”