শুভেন্দু সরতেই ইস্তফা পাঁচ নেতার, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর বিজেপি

শুভেন্দুর পদত্যাগ যে প্রভাব ফেলবে তা মানছেন জেলার তৃণমূল নেতৃত্ব। উল্টোদিকে বিজেপি বলছে, যা দলছাড়ার হিড়িক, ভোটের আগেই তৃণমূল সরকার পড়ে যেতে পারে।

শুভেন্দু সরতেই ইস্তফা পাঁচ নেতার, আত্মবিশ্বাসে ভরপুর বিজেপি
ফাইল চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Dec 17, 2020 | 1:01 PM

মালদহ: বিধায়ক পদ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ইস্তফা দেওয়ার পরই অস্থিরতা বাড়ছে জেলা তৃণমূলে। রীতিমতো গণ ইস্তফা-প্রদান পর্ব শুরু হয়েছে মালদহে (Maldah)। ইতিমধ্যেই পাঁচ অঞ্চলের সভাপতি পদত্যাগ করেছেন। সূত্রের খবর, এই তালিকা আরও দীর্ঘ হবে। শুভেন্দুর সরে দাঁড়ানো যে মালদহে দলের উপর প্রভাব ফেলবে সে কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন মালদহ জেলা শহর তৃণমূলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি। একুশের ভোটের আগে শুভেন্দুর-অভাব যে দলকে ভালই বেগ দেবে সে কথাও মেনে নিয়েছেন তিনি।

বুধবার বিকেলে বিধানসভা ভবনে গিয়ে ইস্তফাপত্র জমা দেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। এদিনই মালদহ জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর বাবলা সরকারের কাছে পদত্যাগ পত্র পাঠান জগদলা অঞ্চল সভাপতি নারায়ণচন্দ্র মণ্ডল। লেখেন, “পদাধিকারীদের বিমাতৃসুলভ আচরণে আমি ব্যথিত, মর্মাহত। তাই অঞ্চল সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলাম। তবে আমি দলেই আছি। দলকে ভালবাসি, ভালবাসব।” একই চিঠি পাঠান বামনগোলার তফিউর রহমান, পাকুয়াহাটের শ্যামল মণ্ডল, চাঁদপুরের সাহেব হাঁসদা, গোবিন্দপুর-মহেশপুরের মানিক মাহাতোও।

এ প্রসঙ্গে নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলেন, “শুভেন্দুবাবুর এখানে অনেক অনুগামী রয়েছেন। তাঁরা চিন্তাভাবনা করছেন। একটা সময় শুভেন্দুবাবু এখানে কাজ করে গিয়েছেন। ওনার একটা প্রভাব আছেই। সেই প্রভাব আমরা কতখানি কাটাতে পারব সেটাও একটা চিন্তার বিষয়।”

মালদহ জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষণের দায়িত্ব শুভেন্দু অধিকারীর হাতেই তুলে দিয়েছিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিভিন্ন সময় জেলায় গিয়ে সংগঠনকে চাঙ্গা করার মন্ত্র দিয়ে এসেছেন তিনি। বিরোধীদের বাড়বাড়ন্তকে দূরে ঠেলে কীভাবে জনসংযোগের মাধ্যমে আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছনো যায় সে অনুপ্রেরণাও শুভেন্দুর থেকে পেয়েছেন জেলার প্রথম সারির বহু নেতা।

নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি (বাঁদিকে), গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডল (ডানদিকে)।

তাই তৃণমূলের সঙ্গে শুভেন্দুর আসন্ন বিচ্ছেদের কথা বুঝে বহু জেলা নেতৃত্বই ‘বেসুরো’ হচ্ছেন। জল্পনা আগামিদিনে একাধিক হেভিওয়েট নেতৃত্বও দল থেকে সরে দাঁড়াতে পারেন। নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি বলছেন, “এখন বিজেপি সব জায়গাতেই টোপ দেবে। আর শুভেন্দুবাবুর থেকে বড় নেতা তো কেউ হতে পারবেন না। শুভেন্দুবাবুর মতো নেতা যদি সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন। ছোটখাটো নেতারা তো করবেনই। এটাই বাস্তব।”

তৃণমূলের এই টালমাটাল অবস্থা আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে বিজেপির জেলা নেতৃত্বের। মালদহ জেলা বিজেপির সভাপতি গোবিন্দচন্দ্র মণ্ডলের কথায় সে সুরই শোনা গেল। তিনি বলেন, “খালি অপেক্ষা করুন আর কয়েকটা দিন। গণহারে পদত্যাগ শুরু হবে। একটার পর একটা যোগদান হবে ভারতীয় জনতা পার্টিতে। তৃণমূলের যা অবস্থা দেখছি তাতে সরকার না পড়ে যায়।”