মালদহ: ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন টাকা তুলতে। কিন্তু তাঁকে সামনে পেয়েই নাকি দু’কথা শুনিয়ে দেন ব্যাঙ্ক ম্যানেজার। ঋণ নিয়ে সুদ দিচ্ছেন না, আবার টাকা তুলছেন, নরমে গরমে সবার সামনেই কৃষককে এমন কথা বলায় অপমানিত হন তিনি। এমনকি তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়। এতেই চূড়ান্ত অপমানিত হয়ে ব্যাঙ্কের মধ্যেই বিষ খেয়ে ফেলেন জনৈক প্রতাপচন্দ্র ঘোষ। হুলুস্থুল পড়ে যায় ব্যাঙ্কের মধ্যে। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের গাজোলের আলমপুরে।
জানা গিয়েছে, কৃষি ঋণের কিস্তির টাকা দিতে দেরি হওয়ায় বাকি গ্রাহকের সামনে চূড়ান্ত অপমান ও হুমকি দেওয়া হয় প্রতাপচন্দ্র ঘোষ নামে এক গ্রাহককে। তাঁর ব্যাহ্ক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করে দেওয়া হয়। তাই ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের সামনেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই কৃষক। হুড়োহুড়ি পড়ে যায় ব্যাঙ্কে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই কৃষককে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। চিকিৎসাধীন। তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক বলে খবর। বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন কৃষক প্রতাপচন্দ্র ঘোষ।
জানা গিয়েছে আলমপুর স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে কৃষি লোন নিয়েছিলেন প্রতাপচন্দ্র ঘোষ। কিন্তু এবার ফসলের অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় সব টাকাই জলে যায় তাঁর। বড় ক্ষতির মুখে পড়েন। তাই ঋণ শোধ করতে গিয়ে হিমশিম দশা হয় প্রতাপের। এখন সংসার চালানোই দায় হয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে তাই নিজের চাষের জমিটুকুও বিক্রি করে দেন। জমি বিক্রি করে পাওয়া আনুমানিক ১৫ লক্ষ টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা করেন। সেখান থেকেই সংসারের খরচের জন্য টাকা তুলতেন।
এ দিনও তেমনি কিছু টাকা তুলতে গেলে বাধা দেন ব্যাঙ্কের ম্যানেজার বলে খবর। তাঁকে চাপ দেওয়া হয় আগের লোন শোধ করার জন্য। ব্যাঙ্কে উপস্থিত গ্রাহকদের সামনে চরম অপমানিত হন প্রতাপ। তাঁকে নাকি ব্যাঙ্ক ম্যানেজার এও বলেন, “আপনার মতো গ্রাহক আমাদের দরকার নেই। ঋণের টাকা শোধ করতে পারেন না। আপনার মত গ্রাহক মরে গেলেও কিছু যায় আসে না।”
এরপরেই চরম অপমানিত বোধ করে তিনি বিষ নিয়ে এসে ব্যাঙ্কের ম্যানেজারের সামনেই তা খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে খবর। তড়িঘড়ি তাঁকে হাতিমারী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শারী রিক পরিস্থিতির অবনতি হলে পরে সেখান থেকে মালদহ মেডিকেল কলেজহাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পুরো ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখনও কাউকে আটক বা গ্রেফতারির খবর পাওয়া যায়নি।