Manohar Pukur Murder: উঠতে-বসতে হত কথা মেনে, হাতের পুতুল বানিয়ে রেখেছিলেন স্ত্রী, বাড়ছিল অবসাদ! খুনের আসল কারণ এটাই

Manohar Pukur Road: মানসিক অবসানে ভুগছিলেন। পুলিশের কাছে জেরায় সে কথা জানিয়েছেন মনোহরপুকুরে স্ত্রীকে খুনে অভিযুক্ত অরবিন্দ বাজাজ।

Manohar Pukur Murder: উঠতে-বসতে হত কথা মেনে, হাতের পুতুল বানিয়ে রেখেছিলেন স্ত্রী, বাড়ছিল অবসাদ! খুনের আসল কারণ এটাই
মনোহর পুকুর রোডে খুনের কারণ জানালেন স্বামী (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 31, 2021 | 11:59 AM

কলকাতা: স্ত্রী তাঁকে হাতে রাখতে চেয়েছিলেন। যাকে বলে আঁচলে বেঁধে রাখা আর কী! তাঁরই কথায় উঠতে হবে-বসতে হবে। তাঁর কথা মেনে করতে হবে সব কিছু। আর স্ত্রীকে ইন্ধন জোগাত তাঁর বাপেরবাড়ির সদস্যরাও। এটাই মেনে নিতে আর পারছিলেন না জামাই অরবিন্দ। দিনের পর দিন চাপে মানসিক শান্তি নষ্ট হচ্ছিল তাঁর। মানসিক অবসানে ভুগছিলেন। পুলিশের কাছে জেরায় সে কথা জানিয়েছেন মনোহরপুকুরে স্ত্রীকে ‍(Manohar Pukur Murder) খুনে অভিযুক্ত অরবিন্দ বাজাজ।

পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্ত্রীকে খুনের কথা স্বীকার করে আরবিন্দ। তিনি জানান, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ প্রথমে বচসা থেকে আচমকাই বাড়িতে থাকা একটি ধারালো ছুরি দিয়ে প্রিয়াঙ্কা দেবীর বুকের বাঁ দিকে প্রথমে কোপ মারেন এবং পরে পেটে, ঘাড়ে সহ শরীরের একাধিক অংশে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে খুন করেন। মেয়েকে খুব ভালোবাসতেন অরবিন্দ। কিন্তু, স্ত্রীকে খুন করার সময় মেয়ে বাধা দিতে এলে মেয়ের অপর কোপ মারে আরবিন্দ। তারপর স্ত্রীর মৃত্যু হলে, মেয়েকে বাঁচানোর জন্য অ্যাম্বুলেন্সে ফোন করেন। পাশাপাশি ১০০ নম্বর ডায়াল করে পুলিশের কাছে সব ঘটনা খুলে বলে আত্মসমর্পণ করেন অরবিন্দ।

অরবিন্দকে প্রাথমিক জেরায় পুলিশ জানতে পারে, শ্বশুরবাড়ির তরফের ক্রমাগত চাপ দেওয়া হত। জামাইকে হাতের মুঠোয় করে রাখতে চেয়েছিলেন স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ১৫ বছর ধরে শ্বশুরবাড়ির সিমেন্টের ব্যবসায় কর্মচারী হিসাবে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেতেন অরবিন্দ। সেই টাকাতেই প্রিয়াঙ্কা ও অরবিন্দ বাজাজের সংসার চলত এবং সেই ১৫ হাজার টাকার মধ্যেই পড়াশোনার খরচ চালাতে হতো মেয়ে আফ্রিকা বাজাজের।

মেয়েকে সুইমিং ট্রেনিং সেন্টারে ভর্তি করিয়েছিলেন, আঁকা শিখিয়েছেন ৯৫ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছেন মেয়ে আফ্রিকা। শ্বশুরবাড়ির সঙ্গে অংশীদারিত্বে বিভিন্ন জায়গায় একাধিক সম্পত্তি রয়েছে আরবিন্দের। উল্লেখ্য একটি ৬ বিঘা জমি বিক্রি করে নিজে আলাদাভাবে কোন ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন অরবিন্দ। কিন্তু শ্বশুরবাড়ির লোক তাতে রাজি হননি।

উপরন্তু নিজে কিছু আলাদাভাবে করতে চাইলেই ক্রমাগত মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হত শ্বশুরবাড়ির তরফে। করা হতো ব্ল্যাকমেইলও। বিগত ১০ মাস ধরে আরও বেশি করে চাপ দেওয়া হচ্ছিল অরবিন্দের ওপর। আর এই সব কিছুতেই শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে ষড়যন্ত্রের শরিক ছিলেন স্ত্রী প্রিয়াঙ্কা বাজাজ। তা থেকেই তারপর ধীরে ধীরে ক্ষোভ তৈরি হয়। দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন অরবিন্দ।

শনিবার রাত ৯টা নাগাদ লালবাজারে ফোন করেন অরবিন্দ বাজাজ। অত্যন্ত শান্তভাবে স্ত্রীকে খুনের কথা পুলিশকে জানান তিনি। মনোহর পুকুর রোড এলাকাটি পড়ে রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকার মধ্যে। ফোনটি পাওয়া মাত্র লালবাজার থেকে খবর দেওয়া হয় রবীন্দ্র সরোবর থানায়। সেখান থেকে পুলিশের একটি দল যায় ওই আবাসনটিতে। চারতলার ঘরে ঢোকে পুলিশ।তখনও ঘরেই বসে ছিলেন অরবিন্দ। মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। আর তারই মধ্যে দুজনের রক্তমাখা শরীর পড়ে ছিল। পুলিশ অরবিন্দের থেকে আরও কিছু জানার চেষ্টা করছে।

আরও পড়ুন : Gariahat Double Murder: কাকুলিয়া জোড়া খুনে সরাসরি জড়িত, ডায়মন্ডহারবার থেকে গ্রেফতার আরও ১! এখনও অধরা ভিকি