নদিয়া: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকদিন বাকি। তার আগে দলের বিরুদ্ধেই বোমা ফাটালেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা। প্রার্থী তালিকা নিয়ে আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এবার দলের কোনও অনুশাসন নেই বলে মন্তব্য করলেন নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক। সরাসরি নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা তৃণমূল নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিধায়ক বলেছেন, “সাজানো বাগান ছারখার করে দিল। চক্রান্ত করে দলটাকে শেষ করে দিল।”
একই বুথে তৃণমূলের প্রতীক দাবি করে একাধিক ব্যক্তি মনোনয়ন দিলেন কীভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলের বিরুদ্ধেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য, দলে কোনও অনুশাসন নেই, শীর্ষস্তর থেকে কোনও গাইডলাইনও দেওয়া হচ্ছে না। নাসিরউদ্দিন সম্পর্কে বিধায়ক বলেন, ‘পলাশীর প্রান্তে আছে মীরজাফর নাসিরউদ্দিন আহমেদ।’
বিধায়ক বলছেন, অঞ্চল সভাপতি, ব্লক সভাপতি এবং তিনি নিজে দলের নির্দেশ মেনে তালিকা তৈরি করেছিলেন। তাঁর দাবি, সেই তালিকা তছনছ করে চক্রান্ত করে দলটাকে শেষ করার জন্য অনেক নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। বিধায়ক, ব্লক সভাপতিকে বাদ দিয়ে কেউ বা কারা প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। সেই প্রার্থীদের দায়িত্ব তিনি নেবেন না বলেও মন্তব্য করেছেন তাপস সাহা। তিনি বলেন, ক্যান্ডিডেটদের যারা নিয়ে এসেছে, তারাই দায়িত্ব নিয়ে জেতাক। দলের কোনও অনুশাসন নেই। প্রার্থীর কথা জেলা সভাপতি বলতে পারছেন না, কোঅর্ডিনেটর বলতে পারছেন না, আইপ্যাক বলতে পারছে না। কে কার কথা শুনবে? দলের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। দলের একাংশের ইন্ধনে এটা হচ্ছে।
তবে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ তাপস সাহার সঙ্গে একমত নন। তৃণমূল নেতা বলেন, “তাপস সাহা দক্ষ সংগঠক, দলটাকে হাতের তালুর মতো চেনেন। তবে তাঁর দাবি যে সম্পূর্ণ সঙ্গত, এমনটা মনে করি না। সবাই টিকিট পাবে এমন নয়। আগামিদিনে সবাই একসঙ্গে লড়াই করব।”
খোদ বিধায়কের মুখে এমন অভিযোগ শুনে বিজেপির দাবি, জেলায় তৃণমূলের অস্তিত্ব শেষ হয়ে এসেছে। বিজেপি নেতা মহাদেব সরকার বলেন, “পায়ের তলায় মাটি হারানো তৃণমূল। দুর্নীতিতে ডুবে আছে। এই পরিস্থিতিতে তাপস সাহা যখন দলের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে, তখন বুঝতে হবে জেলায় বিজেপির আর কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী নেই।”