
নদিয়া: প্রবীণ নাগরিকরা লাইনে দাঁড়িয়ে, কোথাও আবার অ্যাম্বুলেন্সে করে কেউ কেউ এসেছেন। যদিও, সোমবারই কমিশন এই নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অসুস্থ থেকে ৮৫ বছরের উর্ধ্ব যাঁরা আছেন তাঁদের বাড়ি থেকেই শুনানি হবে। এই সবের মধ্যেই একটা ছবি ধরা পড়ল নদিয়ায়। সেখানে রিক্সার হ্যান্ডেল ধরে আছেন বৃদ্ধ মা। ভ্যান চালাচ্ছেন অন্ধ ছেলে। এভাবেই SIR হাসখালি শুনানির কেন্দ্রে এসে পৌঁছলেন তাঁরা।
নদিয়ার হাঁসখালি বগুলা মিলন নগরে মানবিকতার এক হৃদয়ছোঁয়া ছবি ধরা পড়েছে। হ্যান্ডেল ধরে আছেন বৃদ্ধ মা, আর ভ্যান চালাচ্ছেন তাঁর দৃষ্টিহীন ছেলে SIR শুনানির জন্য বিডিও অফিসে পৌঁছাতে গিয়ে এমনই দৃশ্য নজরে আসে সকলের। ওই পরিবারটি ২ নম্বর বগুলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা। ছেলের নাম পানু চৌধুরী, তিনি দুই চোখে দেখতে পান না। বৃদ্ধা মা সুরধ্বনি চৌধুরীকে নিয়েই তাঁর সংসার। ছেলের দৃষ্টিহীনতার কারণে সংসারের দায় কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে মাকে। লোকের বাড়িতে কাজ করে কোনও রকমে দিন গুজরান করেন তিনি। এরই মধ্যে দু’জনেরই নামে SIR শুনানির নোটিস আসে। নোটিস পাওয়ার পর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটছিল তাঁদের।
কী হবে, কীভাবে শুনানিতে পৌঁছবেন এই চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েন মা ছেলে। মঙ্গলবার ছিল শুনানির দিন। উপায় না দেখে বৃদ্ধা মাকে ভ্যানে বসিয়ে নিজেই ভ্যান চালিয়ে বিডিও অফিসে পৌঁছান পানু। গোটা রাস্তা জুড়ে মা হ্যান্ডেল ধরে ছেলেকে পথ দেখান, আর হর্ন বাজিয়ে এগিয়ে যান পানু। এই দৃশ্য বিডিও অফিসে পৌঁছতেই সকলের নজরে আসে। পানু চৌধুরী বলেন, “শুনানিতে এসেছে। নোটিস এসেছে। মা-বাবার ২০০২ সালে নাম নেই তাই এসেছি।”