নদিয়া: ঘরের দেওয়ালে সাজানো বেলুন। আনা হয়েছে কেক। তবে আমন্ত্রিত অতিথিরাও। জন্মদিন উপলক্ষে মেয়েকে নতুন জামা উপহার দেবেন বলে বাজারেও নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা। পরে একাই বাড়ি ফেরেন মেয়ে। দীর্ঘক্ষণ উপরের ঘরে একাই ছিলেন তিনি। এরপর যখন ডাকাডাকি শুরু হয়ে তখন আর সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁর। উপরের ঘরে যেতেই আঁতকে ওঠেন সকলে। গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। এক লহমায় আকাশ যেন ভেঙে পড়ে মৃতের পরিবারের উপর। মুহূর্তে যেন সবটুকু মিথ্যে হয়ে গেল তাঁদের।
মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে নদীয়ার শান্তিপুর থানার বড়বাজার এলাকায়। জন্মদিন পালনের কয়েক ঘণ্টা আগেই নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হলেন দ্বিতীয় বর্ষের এক কলেজ ছাত্রী। তিনি কল্যাণী মহাবিদ্যালয়ে পড়তেন। মৃতের নাম কোয়েল হালদার (২০)।
পরিবার সূত্রে খবর, গতকাল তাঁর ২০ তম জন্মদিন ছিল। পরিবারের তরফ থেকে জন্মদিন উপলক্ষে কেনাকাটা শুরু করেছিল। ওই ছাত্রীর জামা কাপড় থেকে শুরু করে জন্মদিন পালনের বেলুনও কেনা হয়ে গিয়েছিল। যে ঘরে মেয়েটির জন্মদিন পালন হবে সেই ঘরটিকে সাজিয়ে তুলেছিল পরিবার।
গতকাল মেয়েকে নিয়ে বাজার গিয়েছিলেন তাঁর বাবা। রাত দশটা নাগাদ বাড়ি ফিরে আসেন কোয়েল। এরপর উপরের ঘরে একাই ছিলেন বলে জানা যায়। কিছুক্ষণ পর ডাকাডাকি করে কোনও সাড়াশব্দ না মেলায় জানালা দিয়ে দেখা যায় ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে মেয়েটি। চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় শান্তিপুর থানার পুলিশ।
পুলিশ এবং স্থানীয়দের সহায়তায় দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে ঝুলন্ত মৃতদেহটি উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ বিষয়ে আত্মঘাতী ওই ছাত্রীর মা মামনি হালদার জানান,”ইদানিং আমার মেয়ে একটু অন্যরকম হয়ে গিয়েছিল। আগের তুলনায় তার রাগ অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। আজ বাজার করার সময়ও জামা কেনা নিয়ে মজা করে সামান্য একটু কথা কাটাকাটি হয়। মেয়ে বাড়িতে এসে বলেছিল আমার জন্য কাউকে কিছু কিনতে হবে না। এরপরই এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফেলল।” মেয়ের কেন হঠাৎ এমন পরিবর্তন ঘটল সে বিষয়ে কিছুই জানাতে পারেনি তার মা। আজ মৃতদেহটি কে রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ। পাশাপাশি এই ঘটনার পিছনে নিছক আত্মহত্যা নাকি অন্য কোনও কারণ রয়েছে তারও তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।