Mohua Moitra: ৮০০০ অতিথি, ঢুকতে হয়েছে কোড স্ক্যান করে, মহুয়ার রিসেপশন ঘিরেও বিতর্ক

TMC MP: চলতি বছরের জুন মাসে চার হাত এক হয় মহুয়া-পিনাকীর। বলা ভাল, একেবারে নিভৃতে জার্মানিতে বিয়ে সারেন দুজনে। কেউ টেরটুকু পাননি। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হয় দুজনের ছবি। আর তখনই সকলে জানতে পারেন সেই সুখবর। মহুয়া ও পিনাকী উভয়েরই এটা দ্বিতীয় বিবাহ। ছবিতে দেখা যায় বার্লিনের এক প্রাসাদের সামনে পিনাকীর হাত ধরে বসে মহুয়া।

Mohua Moitra: ৮০০০ অতিথি, ঢুকতে হয়েছে কোড স্ক্যান করে, মহুয়ার রিসেপশন ঘিরেও বিতর্ক
মহুয়া মৈত্র, সাংসদImage Credit source: Tv9 Bangla

| Edited By: অবন্তিকা প্রামাণিক

Nov 12, 2025 | 1:32 PM

নদিয়া: নদিয়ার করিমপুরের রেগুলেটেড মার্কেটের ফুটবল মাঠ। সেখানে শনিবার ভিআইপিদের আনাগোনা। নিরাপত্তারক্ষীরা সকাল থেকে ব্যস্ত। কারণ, একের পর এক নীল বাতির গাড়ি ঢুকছে যে…এলাকার তৃণমূল নেতারা তো বটেই, একের পর এক গাড়ি ঢুকছে পুলিশ সুপার থেকে বড় বড় পুলিশ অফিসারদের। কিন্তু কেন? কী ছিল করিমপুরে? আসলে শনিবার ছিল তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও প্রাক্তন বিজু জনতা দল বা বিজেডি সাংসদ পিনাকী মিশ্রের পাঁচ মাস আগে হয়ে যাওয়া বিয়ের রিসেপশন। আর তাকে ঘিরেই এত্ত আয়োজন!

চলতি বছরের জুন মাসে চার হাত এক হয় মহুয়া-পিনাকীর। বলা ভাল, একেবারে নিভৃতে জার্মানিতে বিয়ে সারেন দুজনে। কেউ টেরটুকু পাননি। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হয় দুজনের ছবি। আর তখনই সকলে জানতে পারেন সেই সুখবর। মহুয়া ও পিনাকী উভয়েরই এটা দ্বিতীয় বিবাহ। ছবিতে দেখা যায় বার্লিনের এক প্রাসাদের সামনে পিনাকীর হাত ধরে বসে মহুয়া। পরনে ছিল, পিচ গোলাপি ও সোনালি রঙের শাড়ি। গলায় হার, মাথায় টিকলি। জুন মাসে বিয়ের পর এবার নভেম্বরে তাঁর সংসদীয় এলাকায় রিসেপশন পার্টি থ্রো করলেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ। এর আগে অবশ্য দিল্লিতেও তারকাখচিত হোটেলে এক প্রস্থ রিসেপশন হয়ে গিয়েছে। সেখানে আবার নিমন্ত্রিত ছিলেন অনেক ভিভিআইপিদের সঙ্গে সনিয়া গান্ধিও।

এবার ডেস্টিনেশন করিমপুর। এখান থেকেই বিধানসভায় জিতে প্রথমবারের জন্য জনপ্রতিনিধি হয়েছিলেন মহুয়া মৈত্র। সেই করিমপুরের মাটিতেই শনিবার বিশাল মণ্ডপ তৈরি হয়। সঙ্গে তাক লাগানো আলোকসজ্জা। অনুষ্ঠানের মধ্যমণি একদা বিদেশে নামজাদা সংস্থায় কর্মরতা ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কার তথা বর্তমানে তৃণমূল সাংসদ ও তাঁর স্বনামধন্য আইনজ্ঞ তথা চারবারের প্রাক্তন সাংসদ স্বামী। কিন্তু মহুয়ার এই রিসেপশন নিয়েও বেধেছে বিতর্ক। এক বিজেপি নেতা কৃশানু সিংহ নিজের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছেন, যেখানে প্যান্ডেল খাটিয়ে এই অনুষ্ঠান হয়েছে, সেখানে গত কয়েক বছরে কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা মেলার আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। হিন্দু কীর্তন থেকে শুরু করে বাউল গানের উৎসব, কোনও কিছুরই অনুমতি মেলেনি ওই মাঠে। তাহলে মহুয়ার বেলায় কেন অন্য নিয়ম?

বিজেপি নেতার দাবি, তৃণমূল সাংসদের এই পার্টিতে নাকি মুর্শিদাবাদের বহরমপুর থেকে দুটো বাসে করে গিয়েছিল ক্যাটারিংয়ের টিম। প্রায় ৮০০০ মানুষ নিমন্ত্রিত ছিলেন সেখানে। অনুষ্ঠানের জন্য দুপুর তিনটে থেকে করিমপুরের নতুন বাসস্ট্যান্ড বন্ধ রাখা হয়।

এই ইস্যুতে মুখ খুলেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতাও। তিনি বলেন, “এটা সরকারি মাঠ। নিশ্চয়ই সরকারই অনুমতি দিয়েছে এখানে পার্টি করতে। নয়ত হল কীভাবে?” আর সিপিএম নেতা বলেন, “দল আর সরকারের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। দল আর সরকারের মধ্যে একটা সীমারেখা অবশ্যই থাকা উচিত।”

মহুয়ার এই রিসেপশন পার্টি ইতিমধ্যেই আলোচনায় চলে এসেছে। এলাকার মানুষজনের অনেকে বলছেন,অতিথিদের নাকি কিউআরকোড স্ক্যান করে ঢুকতে হয়েছে পার্টিতে। আর তারপর তো অঢেল বিলাসিতা…ছিল এলাহি খাবারের আয়োজন। জানা যাচ্ছে, চিংড়ি, মাটন, চিকেন তো ছিলই। এছাড়া ছিল পমফ্রেট, ভেটকি। আর মিষ্টির মধ্যে ছিল কলাইয়ের জিলিপি, রসগোল্লা ইত্যাদি-ইত্যাদি।

তবে,রিসেপশনের যে নিমন্ত্রণপত্র সামনে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে, নবদম্পতি পরিষ্কার লিখেছেন, কেউ যেন ফুলের তোড়া এবং গিফট নিয়ে না আসেন। সঙ্গে মদ্যপান এবং ধূমপানও যে করা যাবে না সেই বিষয়ও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে একদিকে বিপুল আড়ম্বর যেমন ছিল তেমনই কিন্তু এই রিসেপশন পার্টিকে পিছু ছাড়েনি বিতর্কও!