
নদিয়া: ডিজিটাল অ্যারেস্ট অপরাধে গ্রেফতার ৯ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল কল্যাণী মহকুমা আদালত। এটি রাজ্যের ডিজিটাল অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথম এক নজিরবিহীন রায়। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করা হল সাইবার ক্রাইম বিভাগের তদন্তকারী অফিসার ও সরকারি আইনজীবীকে। আদালতের এই রায় খুশি আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী থেকে পুলিশ মহল।।
ডিজিটাল অ্যারেস্ট অপরাধে গ্রেপ্তার ন’জনকে যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল কল্যাণী মহকুমা আদালত। সাইবার অপরাধ রোধে দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সাফল্য অর্জন করল রানাঘাট জেলার পুলিশের সাইবার বিভাগ। ডিজিটাল অ্যারেস্ট অপরাধ শুধু ভারতবর্ষ নয়, তাঁর জাল ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে নভেম্বর মাসে নদিয়া জেলার কল্যাণীর এক অবসরপ্রাপ্ত কৃষি বিজ্ঞানীকে ৭ দিন ধরে ডিজিটাল অ্যারেস্ট করে এক কোটি টাকারও বেশি হাতিয়ে নেয় অভিযুক্তরা। এরপর তিনি ডিজিটাল অ্যারেস্টের বিরুদ্ধে কল্যাণী থানার সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে ওই বিজ্ঞানীর মোবাইল ফোন হোয়াটসঅ্যাপ কল লিষ্ট ঘেঁটে জানতে পারে কম্বোডিয়া থেকে তাঁকে ফোন করা হয়েছিল।
গোটা দেশ জুড়ে একশোর অধিক সাইবার অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকা এই চক্রটি প্রায় চারশো কোটি টাকারও বেশি টাকা প্রতারণা করেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ রাজস্থান, হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র ও গুজরাট থেকে একজন মহিলা-সহ মোট ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তদের কল্যাণী আদালতে হাজির করে হেফাজতে নেয় পুলিশ। অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে তদন্তে ওঠে আসে ডিজিটাল অ্যারেস্ট মাধ্যমে ভারতবর্ষ থেকে কয়েকশো কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে এই চক্রটি। তাঁদের কাছে থেকে উদ্ধার করা হয় একাধিক মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, প্রচুর ব্যাঙ্কের পাসবুক,চেকবুক প্যানকার্ড সহ বেশকিছু নথিপত্র।
তদন্ত শেষে চারজন অভিযুক্তকে অন্য মামলায় পাঠানো হয় বাকি ধৃত ন’জনের বিরুদ্ধে ২০০০ পাতারও বেশি চার্জশিট কল্যাণী মহকুমা আদালতে দাখিল করা হয়। চলতি বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মামলার শুনানি শুরু হয়। এরপর বৃহস্পতিবার ওই নয়জন অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত।