নদিয়া: ওষুধ দোকান বন্ধ করে মধ্যরাতে ফিরছিলেন দম্পতি। স্বামী বাইক চালাচ্ছিলেন, স্ত্রী পিছনে বসেছিলেন। কোনওভাবে তাঁর চশমা খুলে নীচে পড়ে যায়। বাইক দাঁড় করিয়ে স্ত্রী চশমাটি কুড়োতে যান। সে সময়ে পিছনে থাকা একটা ছোট ম্যাটাডোরের গাড়িচালকের সঙ্গে বচসা হয় দম্পতির। ওষুধ ব্যবসায়ীর অভিযোগ, বচসা চলকালানীই তাঁর চোখের সামনে ম্যাটাডোর চালক গাড়ি চালিয়ে স্ত্রীকে পিষে দিয়ে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্ত্রীর। ভয়ঙ্কর অভিযোগ ঘিরে শোরগোল নদিয়ার রানাঘাট কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে। জানা গিয়েছে, মৃতার নাম তন্দ্রা বিশ্বাস (৩২)।
স্বামী সুজন বিশ্বাস নদিয়ার তাহেরপুর থানার শ্যামনগর কামগাছি এলাকার বাসিন্দা। সুজন বিশ্বাসের একটি ওষুধের দোকান রয়েছে কোতোয়ালি থানার জালালখালিতে। প্রতি রাতের মতোই রবিবার রাতে দোকান বন্ধ করে বাইকে স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, খামার শিমুলিয়া এলাকা পার হওয়ার সময় কুয়াশার কারণে তার চশমা ঘোলা হয়ে যায়, আর বাইকে বসেই তন্দ্রা চশমা মুছছিলেন। সেই সময় হঠাৎ চশমাটি মাটিতে পড়ে যায়।
চশমা তুলতে গেলে একটা ছোট ম্যাটাডোর চালকের সঙ্গে তাঁদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। অভিযোগ, ওই গাড়িচালক তাঁদেরকে গালিগালাজ করতে থাকেন। ঘটনাস্থলে এসে দাঁড়ায় আরেকটি ছোট ম্যাটাডোর। সেই গাড়ির চালক ব্যবসায়ীকে মারধর করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীর স্ত্রীকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
ব্যবসায়ী তাঁর পরিচিত কয়েকজন ফোন করার চেষ্টা করেন, সে সময়ের ফাঁকে চলে যায় ছোট ম্যাটাডোরটি। অভিযোগ, কিছুক্ষণের মধ্যে হেডলাইন নিভিয়ে এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই তন্দ্রাকে পিষে দিয়ে চলে যান ওই গাড়ি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তন্দ্রা বিশ্বাসকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
ব্যবসায়ীর অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাঁর স্ত্রীকে খুন করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে একটি খুনের মামলা রুজু করে তাহেরপুর থানার পুলিশ। এরপর তদন্তে নেমে ঘাতক গাড়িটি আটক করেছে পুলিশ। রাতেই ওই ঘাতক গাড়ি চালক বিপুল মুস্তাফিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই মহিলার মৃতদেহ নদিয়ার কৃষ্ণনগরে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ওই দম্পতির ৯ বছরের এক ছেলেও রয়েছে। ঘটনার আকস্মিকতায় শোকস্তব্ধ সে।