নদিয়া: সৌমিত্র-সুজাতা নন! আরও এক বৈবাহিক কলহের আঁচ পড়ল এবারের ভোটবঙ্গে। খোদ বিধায়কের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁর স্ত্রী। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন তাঁর স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী। স্বস্তিকা মূলত কসবার বাসিন্দা। কিন্তু এবারই প্রথম তিনি রানাঘাটের ভোটার হয়েছেন। উল্লেখ্য, এখানেই কৃষ্ণগঞ্জের বাসিন্দা মুকুটমণি। স্বস্তিকার দাবি, স্ত্রী হিসাবে তাঁরও এই কেন্দ্রেরই ভোটার হওয়া উচিত। সোমবার শান্তিপুর বিধানসভার গন্দখোলা ৫০ নম্বর বুথে ভোট দিতে যান রানাঘাট লোকসভার তৃণমূলের প্রার্থীর স্ত্রী স্বস্তিকা ভুবনেশ্বরী। ভোট দেওয়ার পরই তিনি বুথ থেকে বেরিয়ে স্বামীর বিরুদ্ধে মুখ খোলেন।
ভোট দিয়ে বেরিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্বস্তিকা বলেন, ‘স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। কিন্তু গত বছর থেকে আমাদের ঝামেলা চলতে থাকে। এফআইআর হয়, মামলা হয়। কিন্তু রাজ্য পুলিশ একদমই আমাকে সহযোগিতা করেনি। চার্জশিট দিচ্ছিল না। হাইকোর্টে গিয়ে রিট পিটিশনের মাধ্যমে চার্জশিট পাই।”
গত কয়েক মাসের মধ্যে মুকুটমণি ও তাঁর স্ত্রীর রাজনৈতিক জীবনেও পালাবদল হয়েছে। মুকুণমণি তাঁর গেরুয়া সঙ্গ ত্যাগ করে তৃণমূলে যোগ দেন। পাল্টা জগন্নাথ সরকারের হাত ধরে স্বস্তির শুরু হয় রাজনৈতিক জীবন। তিনি বলেন, “গত বছর ২৮ মের পর থেকে জগন্নাথ সরকার মনোবল বাড়িয়ে গিয়েছেন। মুকুটমণির বাড়ির কৃষ্ণগঞ্জের ভোটার হওয়ার কথা ছিল আমার। জগন্নাথ স্যরের জন্যই আমি রানাঘাটের ভোটার হতে পেরেছি।” মায়ের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যেতেন। কিন্তু তখনও পর্যন্ত কোনও রাজনৈতিক পরিচয় তৈরি হয়নি। সম্প্রতি তিনি মিঠুন চক্রবর্তীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
এদিন স্বস্তিকা নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বলেন, “অনেকেই আমার এই ঘটনার সঙ্গে সুজাতা মণ্ডল ও সৌমিত্র খাঁ-র সঙ্গে মিলিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু আমি একটাই কথা বলতে চাই, আমার কেস লাইনটা সম্পূর্ণই আলাদা। সুজাতা তো অন্ততপক্ষে ২টো বছর সংসারটা করতে পেরেছিলেন। কিন্তু আমাদের স্পেশ্যাল ম্যারেজ অ্যাক্টে বিয়ে হয়েছিল। আমি ২ ঘণ্টাও সংসার করতে পারেনি ওঁর সঙ্গে। সঙ্গে সৌমিত্রের ক্ষেত্রে তো আর পণ নেওয়ার অভিযোগ ছিল না।”
তবে এই কথাগুলো বলে বুথ থেকে বেরিয়ে চলে যাওয়ার সময়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন স্বস্তিকা। তাঁকে ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা। এ প্রসঙ্গে পরে জিজ্ঞাসা করা হয় মুকুটমণিকে। তিনি বলেন, “জগন্নাথ সরকার ও বিজেপি রাজনীতির জন্য যে পর্যায়ে নেমেছেন, তা বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরলতম ঘটনা। ক্যান্ডিডেটকে নিয়ে যে সে এসে যা তা বলে যাচ্ছে! রানাঘাটের মানুষ তা ইগনোর করছে।”