
শ্রীনগর: কাশ্মীরে এখন উত্তেজনার আবহ। মঙ্গলবার বিকালে হওয়া সন্ত্রাসবাদী হামলার পর থেকেই নতুন করে ‘ভয়’ মিশেছে উপত্যকার আকাশে-বাতাসে। এরপরই জঙ্গি-দমনে আরও তৎপর হয়েছে ভারতীয় সেনা। সেনার অনুমান, বৈসরনের ওই জঙ্গলেই এখন ঘাঁটি করে লুকিয়ে রয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা।
সেই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে জঙ্গি দমন অভিযানে নামে সেনা বাহিনীর একাধিক দল। একই ভাবে জম্মুর উধমপুরে একটি জঙ্গি আশ্রয়ের খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালান নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই তল্লাশি অভিযান চলাকালীন সেনা লক্ষ্য করে গুলি চালায় সন্ত্রাসবাদীরা। পাল্টা জবাব দিতে দেরি করে না সেনাও। দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে আহত হন এক জওয়ান। তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। কিন্তু চিকিৎসা চলাকালীনই মৃত্যু হয় তাঁর।
ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, শহিদ ওই জওয়ান কিন্তু বঙ্গ-সন্তান। নাম ঝন্টু আলী শেখ। বাড়ি নদিয়ার তেহট্টের পাথরঘাটায়। ইতিমধ্যে ঝন্টুর মৃত্যু কান্নায় ভেঙে পড়েছে তার গোটা পরিবার। ২০০৮ সাল থেকে কাশ্মীরে রয়েছেন তিনি।
পরিবার সূত্র খবর, ঝন্টু কাশ্মীরে থাকলেও, তার স্ত্রী রয়েছেন আগ্রার সেনা আবাসনে। সেখানে তার সঙ্গে থাকেন তাদের দুই সন্তানও। ইদে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল ঝন্টুর। কিন্তু নানা চাপে তা আর হয়ে ওঠেনি। পরিবারের সঙ্গেও শেষ কথা হয়েছিল সাত দিন আগে। তারপর থেকে কাশ্মীরে নিজের নানা অভিযানে ব্যস্ত ছিলেন ঝন্টু। বৃহস্পতিবার, অবশেষে তাঁর খোঁজ দিতে বাড়িতে ফোন গেল ঠিকই। কিন্তু সেটা ছুটির নয়, বরং মৃত্যুর। ঝন্টুর আরও দুই দাদাও সেনায় রয়েছেন। তারাই বাড়িতে মৃত্যু খবরটা পৌঁছে দেয়।
ঝন্টুর মৃত্যুতে শোকাহত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রও। বৃহস্পতিবার নিজের ফেসবুক ওয়ালে জওয়ানের মৃত্যুর খবর পোস্ট করে তিনি লেখেন, ‘কাশ্মীরে পাকিস্তানি জঙ্গিদের সঙ্গে লড়াই করতে শহিদ হলেন নদিয়ার তেহট্ট ব্লকের বীর বাঙালি সৈনিক ঝন্টু আলী শেখ। দেশমাতার বীর সন্তান অমর রহে।’