Nadia: ‘ছেড়ে দেব চাকরি’, TMC কর্মীর হাতে বেধড়ক মার খেয়ে হাউহাউ করে কাঁদছেন অধ্যক্ষ! কী এমন করেছিলেন?

Nadia: চাপড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে একাধিক সরকারি জায়গায় ও রাস্তার পাশে নয়ানজুলির ধারে ঝোপ-জঙ্গল সাফাই করে দিচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ। ওই অধ্যক্ষ সেই সব জায়গায় পরিবেশ রক্ষার জন্য সচেতন করতে বোর্ড লাগিয়েছিলেন। সেই বোর্ডগুলিকে ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

Nadia: ছেড়ে দেব চাকরি, TMC কর্মীর হাতে বেধড়ক মার খেয়ে হাউহাউ করে কাঁদছেন অধ্যক্ষ! কী এমন করেছিলেন?
কাঁদছেন অধ্যক্ষImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: তন্নিষ্ঠা ভাণ্ডারী

Jul 03, 2025 | 2:20 PM

চাপড়া: কলেজের অধ্যক্ষকে বেধড়ক মার তৃণমূল কর্মীর দাদার! আতঙ্কে চাকরি ছাড়তে চাইছেন ওই অধ্যক্ষ। TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে সেই অভিযোগের কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন অধ্যক্ষ। অভিযুক্ত এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাঁকে ধরছে না বলে দাবি করেছেন ওই অধ্যক্ষ। নদিয়ার চাপড়া এলাকায় উঠেছে অভিযোগ।

চাপড়ার গভর্নমেন্ট জেনারেল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষের নাম শুভাশিস পাণ্ডে। ২০২১ সালে তিনি চাপড়া কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে নিযুক্ত হন। তিনি মূলত কীটপতঙ্গ রক্ষা, তাদের বংশবিস্তার এবং কৃষিকাজের ফলন বৃদ্ধি নিয়ে গবেষণা করেন। পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষার জন্যে গোটা দেশ জুড়ে কাজ করেছেন তিনি। প্রায় পাঁচ বছর ধরে চাপড়ায় কর্মরত আছেন। ওই এলাকাতেও যাতে কীটপতঙ্গ অবলুপ্তি না হয়, সেই কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন অধ্যক্ষ। আর তাতেই নাকি বাধ সেধেছে তৃণমূল!

জানা গিয়েছে, চাপড়ায় দীর্ঘদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে একাধিক সরকারি জায়গায় ও রাস্তার পাশে নয়ানজুলির ধারে ঝোপ-জঙ্গল সাফাই করে দিচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ। ওই অধ্যক্ষ সেই সব জায়গায় পরিবেশ রক্ষার জন্য সচেতন করতে বোর্ড লাগিয়েছিলেন। সেই বোর্ডগুলিকে ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। পরবর্তীতে বুধবার তিনি নিরাপত্তারক্ষীকে সঙ্গে নিয়ে বোর্ডগুলি মেরামতি করতে যান। তখনই এক ব্যক্তি তাঁকে প্রশ্ন করে, অনুমতি না নিয়ে কেন বোর্ড লাগাচ্ছেন তিনি? এরপরই নিরাপত্তারক্ষীর সামনে তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ অধ্যক্ষের।

শুভাশিস পাণ্ডের আরও দাবি, যাঁর বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে, তাঁর ভাই হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য। তিনিও তৃণমূল কর্মী। বিরোধীরা বলছেন, ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে নয়নজুলি ভরাট সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। শাসকদলের প্রভাব খাটিয়ে সরকারি জায়গা পরিষ্কার করে জবরদখল করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

অভিযুক্তের নাম অজয় ঘোষ। অভিযুক্ত অজয় ঘোষের ভাই চাপড়া হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য। অধ্যক্ষ আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে চিকিৎসার জন্য চাপড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অধ্যক্ষ শুভাশিস পাণ্ডে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চাপড়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি সংবাদমাধ্যমের সামনে যন্ত্রণায় কেঁদে ফেলেন। বলেন, “আমাকে এখান থেকে মুক্তি দিন, ডিপার্টমেন্টকে বলব যে কোনও জায়গায় আমাকে ট্রান্সফার করে দিন। আমি ট্রান্সফার নিয়ে নেব। যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে চাকরিটাও ছেড়ে দেব।” চরম আতঙ্কের সঙ্গে তিনি বলেন, “আমাকে যেভাবে মারধর করা হয়েছে, তাতে আমি এই কলেজে কিছুতেই আর কাজ করতে চাই না।”

অন্যদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্ত অজয় ঘোষ বলেন, “সেই সময় আমার মানসিক অবস্থা ভাল ছিল না। সেখানে যদি নিজের বাবাও থাকত, আমি তাঁকেও মারতাম করতাম। আমি তখন খুব রেগে গিয়েছিলাম, পাগলের মতো হয়ে গিয়েছিলাম। আমি নিজের অন্যায় স্বীকার করে নিচ্ছি।”
লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। যদিও এই ঘটনায় এখনও অভিযুক্ত অধরা।