Shantipur Tant Artist: দিনে ৫০ টাকা আয়ে আর কতদিন! অতীত হয়ে যাবে না তো ‘শান্তিপুরের তাঁত’? আশঙ্কায় শিল্পীরা

Shantipur Tant Artist: নতুন করে কেউ আর এই শিল্পের দিকে আগ্রহ করে এগিয়ে আসছেন না বলে দাবি শিল্পীদের। তাঁত শিল্পীরা মূলত সরকারের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন এমন পরিস্থিতির জন্য।

Shantipur Tant Artist: দিনে ৫০ টাকা আয়ে আর কতদিন! অতীত হয়ে যাবে না তো 'শান্তিপুরের তাঁত'? আশঙ্কায় শিল্পীরা
শান্তিপুরের তাঁত শিল্পী (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 01, 2023 | 7:38 PM

নদিয়া: বছরের পর বছর একই ছন্দে তাঁত চালাচ্ছেন শিল্পীরা। আরামদায়ক সুতির কাপড়ে রং মিলিয়ে তৈরি করা সে সব শাড়িতে মিশে আছে বাংলার ঐতিহ্য। তবে শুধু ঐতিহ্য আর ইতিহাস দিয়ে তো আর পেট চলে না! একখানা শাড়ি বুনলে জোটে ২০০ টাকার মতো মজুরি। তা দিয়ে আর যাই হোক সংসার চলে না। তাঁত শিল্প থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে নতুন প্রজন্ম। মে দিবসে সেই আক্ষেপের কথাই শোনালেন নদিয়ার শান্তিপুরের তাঁত শিল্পীরা। তাঁদের দাবি, সরকার পাশে থাকলে হয়ত ধ্বংস হত না শান্তিপুরের হস্তচালিত তাঁত শিল্প দাবি।

নেই সঠিক মজুরি, নেই কোনও সরকারি পদক্ষেপ। শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প এখন ধ্বংসের পথে। এভাবে চলতে থাকলে কোনও তাঁতি আর খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেও দাবি করেছেন শিল্পীরা। নদিয়ার শান্তিপুর এলাকায় একসময় লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের ভরসা ছিল তাঁত শিল্প। মূলত তাঁতের ওপর ভরসা করেই চলত সংসার। দিন দিন পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার ফলে আজ হাতে গোনা কয়েকজন তাঁত বুনছেন। তাও কতদিন আর তাঁত বুনে সংসার চালাতে পারবেন সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না। নতুন করে কেউ আর এই শিল্পের দিকে আগ্রহ করে এগিয়ে আসছেন না বলে দাবি শিল্পীদের।

তাঁত শিল্পীরা মূলত সরকারের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন এমন পরিস্থিতির জন্য। শান্তিপুরের তাঁত শিল্পী অশোক প্রামাণিক প্রায় ৩৫ বছর ধরে তাঁত বুনছেন। তিনি বলেন, ‘আগের মতো তাঁত শিল্পে আর সেভাবে মজুরি নেই। একশ্রেণির মহাজনরা তাঁদের মুনাফা বাড়ানোর জন্য তাঁতিদের মজুরি কমিয়ে দিয়েছেন।’ তাঁর অভিযোগ, বাইরের রাজ্য থেকে যে সমস্ত কাপড় আসছে সেই কাপড়ের জন্য হস্ত চালিত তাঁত কাপড়ের চাহিদা অনেকটাই কমেছে। তাঁর দাবি, এখন তাঁত বুনে দিনে ৫০ টাকা আয় হয়। সেই কারণেই সংসার চালাতে কার্যত নাজেহাল হচ্ছে তাঁত শিল্পীরা।

আর এক বর্ষীয়ান তাঁত শিল্পী শ্যামল বসাক বলেন, ‘মূলত মহাজনদের অতিরিক্ত মুনাফার লোভের কারণেই দিন দিন তাঁত শিল্প ধ্বংসের পথে। তিনি জানান, একটা শাড়ি তৈরি করতে মোটামুটি আড়াই দিন সময় লাগে। আর মজুরি মেলে ২২০ টাকা।’ ফলে, সংসার চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেন তিনি। আর নতুন প্রজন্মের কেউই এই শিল্পে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বিষয়ে শান্তিপুরের বিধায়ক ব্রজকিশোর গোস্বামীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আগেও একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে তাঁত শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। মূলত তাঁতিরা যাতে এই শিল্পের উপর নির্ভর করে সংসার চালাতে পারে সেই দিকটা নজর রাখা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি রাজনৈতিক দলের অ্যাজেন্ডা ছিল মূলত তাঁত শিল্প বাঁচানো নিয়ে। যেহেতু কেন্দ্র সরকার এই তাঁত শিল্পে অগণী ভূমিকা নিয়ে থাকে, সেই কারণে আমরা নতুনভাবে কোনও ভাল পদক্ষেপ কেন্দ্র সরকারের তরফ থেকে পাইনি।’