
নদিয়া: বিদেশের মাটিতে গিয়ে দেশের জন্য সোনার মেডেল এনেছিলেন তিনি। বিদেশে উড়িয়েছিলেন ভারতের জাতীয় পতাকা। তারপর জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই এসেছে। বর্তমানে ক্যান্সারে আক্রান্ত নদিয়ার সোমনাথ মালো। ভাল করে হাঁটতেও পারেন না। স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাতেন সরকারি চাকরির টাকায়। সেটাও আর রইল না। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যে ২৫ হাজার ৭৫২ জনের চাকরি বাতিল হয়েছে, সেই তালিকাতেই নাম রয়েছে সোমনাথ মালোর।
২০০২ সালে হাই জাম্পে জিতে সোনার মেডেল জিতেছিলেন সোমনাথ। দক্ষিণ কোরিয়ায় উড়িয়েছিলেন ভারতের পতাকা। পরে মারণরোগ ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হন তিনি। এরপর ২০১৬ সালে চাকরি পান সরকারি স্কুলের করণিক বা ক্লার্ক পদে। চাকরি হারিয়ে হতাশ সোমনাথ। কীভাবে সংসার চলবে, মারণ রোগের চিকিৎসাই বা কীভাবে করাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তিনি।
নদিয়ার বীরনগর হাইস্কুলের গ্রুপ সি পদে কর্মরত ছিলেন তিনি। পরিবারে রয়েছে কন্যাসন্তান ও স্ত্রী। মাত্র তিন বছর বয়সে ভুল চিকিৎসায় প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েন তিনি। থেমে থাকেনি জীবনযুদ্ধের লড়াই। যা বেতন পেতেন, তাতেই সংসার চালিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছিলেন সোমনাথ। এখন কী হবে? স্ত্রী’র চোখের জল বাধ মানছে না।
নদিয়ার তাহেরপুর পুরসভার অন্তর্গত ডি ব্লকের বাসিন্দা সোমনাথ চাইছেন, সোমা পালের মতো তাঁর ক্ষেত্রেও চাকরির সুযোগ দেওয়া হোক। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তাঁর আর্জি, তাঁর পরিবারকে যেন বাঁচান তিনি। সোনার মেডেলটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে দেখতে সোমনাথ বলেন, “দেশের জন্য মেডেল এনেছিলাম। আজ আমার চাকরি নেই। এ তো দেশের লজ্জা।”