
নদিয়া: ফের সরকারি আধিকারিককে হেনস্থার অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। পৌরসভার পিডব্লিউডির এক অফিসারকে মারধরের অভিযোগ। যার জেরে উত্তেজনা তৈরি হল নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। উল্লেখ্য, এর আগে এক পুলিশ অফিসারকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে এবার ফের একবার সরকারি আধিকারিককে নিগ্রহের উঠল শাসক দলের নেতার বিরুদ্ধে।
জানা গিয়েছে, নদিয়ার কৃষ্ণনগর ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমিত ঘোষ। তিনি পিডাব্লিউডি ওই আধিকারিক তথা পেশায় সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়র সুজিত পালকে বেধড়ক মারধর করেছেন পৌরসভার ভেতরেই। আজ পৌরসভার চেয়ারম্যানের নির্দেশমতো পিচের রাস্তার কাজ সংক্রান্ত বিষয়ের হিসাব তৈরি করছিলেন সুজিতবাবু। তখন এলাকার কোন কোন ওয়ার্ডে কতটা পেপার ব্লকের কাজ হয় তার হিসাব চেয়েছিলেন পৌরসভার চেয়ারম্যান রিতা দাস। অভিযোগ, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুমিত ধর প্রশ্ন করেন, তাঁর ওয়ার্ডে ‘এস্টিমেটেড অ্যামাউন্ট’ কেন লেখা হয়েছে? সেই উত্তরে সুজিত জানান, বিভাগীয় ভাবে গোটা কাজ দেখা হয়েছে। আর সেখান থেকেই বচসার সূত্রপাত। অভিযোগ, হঠাৎ করেই পিডব্লুডি-এর ওই আধিকারিককে কলার ধরে মারধর এবং কিলচর ঘুসি মারতে থাকে অভিযুক্ত ওই কাউন্সিলর।
ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় পৌরসভা চত্বরে। ছুটে আসেন পৌরসভার চেয়ারম্যান রিতা দাস। এরপর কৃষ্ণনগর থানার পুলিশ আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত আধিকারিক। ঘটনায় আতঙ্কিত রীতা নিজেও। তিনি বলেন, “দিনের পর দিন একাধিক কাউন্সিলর আমার সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করেন। পৌরসভার কাজে ব্যাঘাত ঘটাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আমার নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য আইসির কাছে আবেদন করেছি।” সুজিতবাবু বলেন, “চেয়ারম্যানের অর্ডার পেয়েই এসেছি। উনি একটা হিসাব চান। সেই কাজ করছিলাম। এরপর হঠাৎ করেই একাধিক কাউন্সিলর এসে বলেন এক্ষুনি যা লিস্ট তৈরি হয়েছে দেখাতে। একই সঙ্গে চেয়ারম্যান প্রতি ওয়ার্ডে কী কাজ হয়েছে তার এস্টিমেটেড অ্যামাউন্ট চান। সেইটা নিয়েই আমায় বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। চড়-ঘুষি-থাপ্পর মারা হয়েছে।” কাউন্সিলর সুমিত ঘোষ বলেন, “সব কাউন্সিলর অভিযোগ করে বলেছিলেন পৌরসভার হিসাবে গড়মিল আছে। পিচের হিসাব নিতেই গিয়েছিলাম। তবে সুজিতবাবু অনেক দিন ধরেই আসছেন না। আজ অফিসে এসেছিলেন। হিসাব দেখাতে বলি। তারপর উনি বলেন এই হিসাব আমায় দেবেন না চেয়ারম্যানকে দেবেন বলে ধাক্কা দেন।”