বনগাঁ: জন্মদিনে কেক ও পায়েস হলেই চলবে। জানিয়েছিল বাবা-মাকে। মা অবশ্য মাংস করার কথাও জানিয়েছিল। কিন্তু, কেক কাটা আর হল না। জন্মদিনেই ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল বছর এগারোর এক নাবালকের। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন ওই নাবালকের বাবা-মা। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার সুন্দরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সুন্দরপুর গ্রামে।
মৃত নাবালকের বাবা কলকাতায় কাজ করেন। ছেলের জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাড়ি আসেন। এদিন সকালে তার বাবা ছেলের কাছে জানতে চায়, জন্মদিনে কি খেতে চায় সে? নাবালক জানিয়েছিল, কেক ও পায়েস হলেই চলবে। নাবালকের মা মাংস আনতে বলেছিল স্বামী। বিকেলে বাড়িতে ছেলেকে রেখে স্বামী-স্ত্রী বাজারে কেক ও পায়েসের বাজার করতে যান। ওই নাবালকের মা কিছুক্ষণ পর দুধ ও কেক নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। দেখেন, রুমে টিভি চলছে। ডেকেও ছেলের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। তখন তিনি জানালা দিয়ে দেখেন, গলায় গামছা গিয়ে ঝুলছে ছেলে। কান্নায় ভেঙে পড়েন নাবালকের মা।
খবর পেয়ে বাজার থেকে আসেন নাবালকের বাবা। তিনি বুঝতে পারছেন না, কোথা থেকে কী হল। কেন তার সন্তান গলায় দড়ি দিল, বুঝতে পারছেন না তিনি। বললেন, বাজার যাওয়ার সময়ও ছেলের মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু লক্ষ্য করেননি তাঁরা। সন্তানকে হারিয়ে শোকস্তব্ধ পরিবার। ছেলের নাম ধরে কেঁদেই চলেছেন নাবালকের মা।
এক প্রতিবেশী বলেন, “ওরা গরিব মানুষ। ওর বাবা কলকাতায় কাজ করেন। ছেলের জন্মদিনের জন্য এসেছিলেন। ছেলেকে বলেছিলেন, এবার তার বন্ধুদের নেমন্তন্ন করতে পারবেন না। পরের বছর সবাইকে বলবেন। ছেলে কিছু বলেনি।” ওই প্রতিবেশী জানান, পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত ওই নাবালক। খুবই শান্ত ছেলে ছিল। সে কেন গলায় দড়ি দিল, প্রতিবেশীরাও বুঝতে পারছেন না। প্রতিবেশীরা সবাই ভিড় করেছেন নাবালকের বাড়িতে। রুমের একপাশে পড়ে রয়েছে দুধ আর কেক। পায়েস বানানো আর হল না।