
নৈহাটি: প্রতিবেশীদের সঙ্গে তেমন মেলামেশা করতেন না। চারদিন ধরে বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ ছিল। প্রতিবেশীরাও তেমন নজর দেননি। কিন্তু, ওই পরিবারের এক আত্মীয় দেখা করতে আসার পরই মর্মান্তিক ঘটনা সামনে এল। বাড়ির ভেতর মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন গৃহকর্ত্রী। আর মৃতদেহের পাশেই শুয়ে রয়েছেন মৃতার অসুস্থ স্বামী। আর তাঁদের পুত্রও দিশাহারা অবস্থায় বসে রয়েছেন। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার নৈহাটির। মৃত মহিলার নাম তৃপ্তি নন্দী। প্রতিবেশীদের অনুমান, দিন চারেক আগেই মৃত্যু হয়েছে বছর পঞ্চান্নর ওই মহিলার।
নৈহাটি পৌরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের শাস্ত্রী রোড এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তৃপ্তি নন্দী অসুস্থ ছিলেন। মৃতার স্বামী গৌর নন্দীও অসুস্থ। আর তাঁদের ছেলের মানসিক সমস্যা রয়েছে। শুক্রবার বিকেলে তৃপ্তি নন্দীর বোন হাওড়া থেকে এসে দেখেন, ঘর থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছে। এরপর ঘরে ঢুকে দেখেন, তাঁর দিদির মৃতদেহ বিছানায় পড়ে রয়েছে। পাশে শুয়ে রয়েছেন গৌর নন্দী। রসে রয়েছেন তাঁদের পুত্র। এরপরই প্রতিবেশীদের খবর দেন তিনি। প্রতিবেশীরা তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় নৈহাটি থানার পুলিশ। পুলিশ এসে তৃপ্তি নন্দীর দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি তাঁর অসুস্থ স্বামী গৌর নন্দীকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।
কেদারনাথ দে নামে এক প্রতিবেশী বলেন, “ওই তিনজন প্রতিবেশীদের সঙ্গে বেশি মেলামেশা করতেন না। কিছু জিজ্ঞাসা করলেও খুব বেশি কথা বলতেন না। চারদিন ধরে বাড়ির বাইরে বেরোননি কেউ। আমরাও আর খেয়াল করিনি। শুক্রবার গৌর নন্দীর শ্যালিকা হাওড়া থেকে আসার পরই ঘটনাটি জানা যায়। মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ বেরোচ্ছিল। মনে হচ্ছে, দিন চারেক আগেই ওই মহিলার মৃত্যু হয়েছে।”
নৈহাটির পৌরসভার পৌরপ্রধান অশোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই পরিবার কারও সঙ্গে বেশি মেলামেশা না করায় ঘটনাটি প্রথমে জানতে পারা যায়নি। কিন্তু, আমাদের বিএলএ-রা ওই বাড়িতে গিয়েছিল। দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে জানিয়েছিল। তারপর পদক্ষেপ করা হয়।” তিনি আরও বলেন, “এর আগেও নৈহাটিতে এরকম একটি ঘটনা ঘটেছিল। হরিদাসঘাট রোডে এক মহিলা মারা গিয়েছিলেন। তাঁর দাদা মৃতদেহ আগলে বসেছিলেন।”