
অশোকনগর: আপনার ছেলেকে অপহরণ করা হয়ে হয়েছে। মুক্তিপণ হিসাবে দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকা। ফোনটা আসতেই মুহূর্তেই দুশ্চিন্তার মেঘ গ্রাস করে গোটা পরিবারে। মাথায় হাত বাবার। কী করবেন বুঝতে না পেরে সোজা পুলিশের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ পেয়ে তদন্তেও নামে পুলিশ। কিন্তু, তাতে যে শেষ পর্যন্ত এই তথ্য উঠে আসবে তা ভাবতে পারেননি কেউ। গোটা ঘটনা দেখে হতবাক অপহৃত যুবকের পরিবারের সদস্য়রা। ঘটনা অশোকনগর থানা এলাকায়।
অশোকনগরেই গুমা এলাকাতেই বাড়ি ছাব্বিশ বছরের ফিরোজ মণ্ডলের। পেশায় গাড়ি ব্যবসায়ী। কিন্তু, গাড়ি সংক্রান্ত বিষয়েই এক ফাইন্যান্স সংস্থার সঙ্গে তাঁর সমস্যা চলছিল বলে জানা গিয়েছে। প্রয়োজন লক্ষাধিক টাকার। সে টাকার খোঁজেই তৈরি হয় প্ল্যান। পুলিশ সূত্রে খবর, অপহৃত হওয়ার নাটক করে ফিরোজ। সঙ্গ দেয় কয়েকজন বন্ধু।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় বামনগাছি এলাকায় একটি জায়গায় বন্ধুদের সঙ্গে মদ্যপান করছিল ফিরোজ। সেখানেই নিজের আর্থিক সমস্যার কথা জানায়। তারপরই তৈরি হয় অপহরণের নাটকের ‘স্ক্রিপ্ট’। অচেনা নম্বর থেকে সোজা বাবার কাছে ফোন যায়। এদিকে ছেলের অপহরণের কথা শুনে ততক্ষণে পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে গিয়েছেন ফিরোজের বাবা। পুলিশ তদন্ত শুরু করতেই চাপে পড়ে ফিরোজ। ভুল তথ্য় দিয়ে পুলিশি তদন্তকে ঘুরিয়ে দেওয়ারও চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। কখনও বামনগাছি, আবার কখনও লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকা, আবার কখনও বর্ধমানেও ঘুরে বেড়াতে থাকে।
যদিও শেষ পর্যন্ত পুলিশের বুদ্ধির কাছে হার মানে ফিরোজ। সোমবার গভীর রাতে শিয়ালদহে ফিরোজের সন্ধান পায় পুলিশ। সূত্রের খবর, পুলিশি জেরায় নিজের কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন ফিরোজ। ফাইন্যান্স কোম্পানির ঝামেলা মেটাতে টাকার প্রয়োজন ছিল, তাই সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে জানায়। মঙ্গলবার দুপুরে গোপন জবানবন্দীর জন্য বারাসত আদালতে পাঠানো হয়।