
হালিশহর: ৮ মাস ধরে সৌদি আরবে আটকে বাংলার ৬০ জন যুবক। সেই ৬০ জনের মধ্যে একজন হালিশহরের রবিপ্রতাপ সিং। এক নির্মাণ কোম্পানির হয়ে কাজ করতে গিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু যে কোম্পানির হয়ে কাজে গিয়েছেন, সেই কোম্পানি টাকা-পয়সা দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। ঠিকমতো খাবারও পাচ্ছেন না। এমনকি, নথিপত্র সব কোম্পানির কাছে থাকায় বাড়িও ফিরে আসতে পারছেন না তাঁরা। চিন্তায় রয়েছেন রবির পরিবার। রবিকে ফেরাতে চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানালেন প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং।
৮ মাস আগে সৌদি আরবের জুবাইল যান রবিপ্রতাপ সিং। প্রথমে সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু, গত কয়েকমাস ধরে সমস্যায় পড়েছেন রবি-সহ বাংলার ৬০ যুবক। শুক্রবার রবির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, ছেলেকে নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন রবির বাবা-মা। রবিপ্রতাপের মা সুনীতা দেবী বলেন, “আমরা খুব চিন্তায় রয়েছি। ভয় লাগে, ওখানে না কিছু করে দেয়। ঠিকঠাক খেতে দেয় না। টাকাপয়সাও দেয় না।”
রবিপ্রতাপের বাবা অভিমন্যু সিং বলেন, “হালিশহর থানাকে জানিয়েছি। তারা বলল, দেখছি। তবে এখনও কোনও কিছু হয়নি। প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংকেও জানিয়েছি। রাতে আমরা ঘুমোতে পারি না।” ছেলে ফোনে কথা বলে এটাই যা স্বস্তির বলে জানালেন রবির বাবা-মা। রবির স্ত্রী জুহি সিং বলেন, “প্রথমে সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। টাকাও পাঠাতেন। তারপর থেকে আর টাকা দিচ্ছে না কোম্পানি। খাবারও ঠিকমতো দিচ্ছে না।”
রবির স্ত্রী জুহি সিং
এদিন জুইয়ের ফোনে ভিডিয়ো কল করেন রবি। তখনই তাঁর আটকে থাকার কারণ জানতে হলে রবি বলেন,তাঁরা বাড়ি ফিরে আসতে চান। কিন্তু, কোম্পানি ভিসা ও অন্যান্য কাগজপত্র আটকে রেখেছে। তিনি বলেন, “এখান থেকে যাওয়ার জন্য একটা এক্সিট পেপার লাগে। সেটা দিচ্ছে না। কোম্পানি বলছে, আমাদের কাছে নেই। আমরা বাড়ি ফিরতে চাই।”
ছেলেকে ফেরাতে ব্যারাকপুরের প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংয়ের দ্বারস্থ হয়েছে রবির পরিবার। এই নিয়ে অর্জুন বলেন, “ওখানে প্রায় ৪০০ জন আটকে রয়েছেন। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের ৬০ জন রয়েছেন। ভারতের আরও অনেকে রয়েছেন। এছাড়া অন্য দেশের অনেকে আটকে রয়েছেন। রবিকে ফেরাতে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রীকে মেইল করা হয়েছে। আমি ব্যক্তিগত সূত্রে সৌদি আরবের দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।” দ্রুত রবিকে ফেরানো হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
রবিকে ফেরাতে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানাল রাজ্যের শাসকদলও। হালিশহর পৌরসভার পৌরপ্রধান শুভঙ্কর ঘোষ বলেন, “রবিপ্রতাপ সিংয়ের কথা আজ শুনলাম। মহকুমা শাসক থেকে বিধায়ক এবং সাংসদকেও জানাব বিষয়টি।”