
উত্তর ২৪ পরগনা: আগরপাড়ার বাসিন্দা প্রদীপ করের আত্মহত্যা ঘিরে রাজনৈতিক পারদ ক্রমেই চড়ছে। পরিবারের অভিযোগ, NRC আতঙ্কেই আত্মহত্যা করেছেন তিনি। আজ অর্থাৎ বুধবার তাঁর বাড়ি গিয়েছেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে সুর চড়িয়েছেন নির্বাচন কমিশন ও মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের বিরুদ্ধে। যে সময় তৃণমূল এই ঘটনার সব দায় চাপাচ্ছে বিজেপি-র উপর, সেই সময় আবার বিজেপি পাল্টা প্রদীপ করের মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চেয়েছে। তাদের দাবি, ২০০২ সালের তালিকায় প্রদীপের নাম ছিল। তাহলে তো কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, ভোটার তালিকা থেকে তাঁর নাম বাদ যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। সেক্ষেত্রে তাঁর ভয় থাকবে কেন? অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি দাবি স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের।
পানিহাটির বিজেপি নেতা চণ্ডীচরণ রায় বলেন, “তৃণমূল সরকার যেভাবে অপ্রচার এর আগে করে এসেছে নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে। কমিশন তো বলেছে ২০০২ সালের ভোটার তালিকা মাইলস্টোন। তার উপর বেস করেই নির্বাচন কমিশন SIR করবেন। তাহলে কেন আত্মহত্যা করলেন? ওঁকে প্ররোচিত করা হয়নি তো? আমি যেটা জানতে পেরেছি ওঁর পারিবারিক কিছু বিষয় ছিল। মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। এই বিষয়গুলোর তদন্ত হোক। আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত চাইছি। কমিশন ও বিজেপির বিরুদ্ধে যেভাবে তৃণমূল অপ্রচার করছে তার বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত চাইছি। কোনও হাইকোর্টের জাজকে দিয়ে করানো হোক বা সিবিআই-কে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করানো হোক। আমরা ওঁর হাতের লেখা দেখার জন্যও অনুরোধ করছি।”
বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী কী বলেছেন?
বিরোধী দলনেতা বলেন, “ওই লোকটার বাড়ির লোক তৃণমূল করে। আর যিনি মারা গিয়েছেন তাঁর নিজের কেউ নেই। ওটা ফলস সার্টিফিকেট দিয়েছেন। ২০০২ এর ভোটার তালিকায় তো নাম ছিল। ওঁর তো CAA বা এইসবের কোনও গল্পই নেই। ২০০২ এর ভোটার। সব মিথ্যার উপর দাঁড়িয়ে আছে।”
এ দিকে আবার প্রদীপের পাশ থেকে উদ্ধার হওয়া নোট ঘিরেও রহস্য জোরাল হয়েছে। পুলিশের দাবি, নোটে লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।’ কিন্তু পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য, প্রদীপ করেন ডান হাতের চারটে আঙুল ছিল না। ৮০ সালের আগে একটি দুর্ঘটনায় ডান হাতের চারটে আঙুল কাটা যায় প্রদীপ করেন। ডান হাতেই খেতেন, কাজ করতেন, তবে লিখতে পারতেন কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা প্রকাশ করেছেন প্রদীপ করের ভগ্নিপতি উত্তর হাজরা।