Arjun Singh: সাংসদের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে উদ্ধার ৩টি তাজা বোমা! অনুসন্ধানে পুলিশ কুকুর
Arjun Singh: বিজেপি সাংসদের (Arjun Singh) বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তভার ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে এনআইএ (NIA) তথা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তারই ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে মঙ্গলবার সকালে সাংসদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে দুষ্কৃতীরা।
উত্তর ২৪ পরগনা: সাংসদ অর্জুন সিংয়ের (Arjun Singh) বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে উদ্ধার তিনটি তাজা বোমা। হরেরাম মাড়োয়ারি নামে এক বাসিন্দার বাড়ি থেকে উদ্ধার তিনটি বোমা। ঘটনাস্থলে সিআইডি, বম্ব স্কোয়াড ও ফরেন্সিক দল ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেট। বোমাগুলিকে নিষ্ক্রিয় করার কাজ চলছে। কে বা কারা এই বোমা রাখল তা এখনও স্পষ্ট নয়। দুষ্কৃতীদের খোঁজ চলছে বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। নামানো হয়েছে স্নিপার ডগও। এমনকী বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন সিআইডির (CID) গোয়েন্দারা।
বিজেপি সাংসদের (Arjun Singh) বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্তভার ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছে এনআইএ (NIA) তথা জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তারই ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে মঙ্গলবার সকালে সাংসদের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি করে দুষ্কৃতীরা। এদিনই দুপুরে ফের সাংসদের বাড়ি থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে তাজা বোমা উদ্ধারের ঘটনায় কার্যত আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে সাংসদের নিরাপত্তা নিয়েও।
মঙ্গলবার সকাল ন’টায় অর্জুন সিং-এর (Arjun Singh) বাড়ির পিছনে আবার বোমা ছুড়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। ছবি তুলতে বাধা পুলিশের। শুরু হয় তদন্ত। ৮ ই সেপ্টেম্বরের পর আবার ফের বোমাবাজি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সকাল ন’টার সময়ে আচমকাই অর্জুন সিংয়ের বাড়ির পিছনে বোমা ছুড়ে মারে দুষ্কৃতীরা। গত ৮ সেপ্টেম্বরের বোমাবাজির পর এলাকায় নতুন করে আরও ২০টা সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়। বাড়ানো হয় পুলিশ পিকেট। সঙ্গে সিআইএসএফ জওয়ানদের (CISF) প্রহরাও রয়েছে। তার মাঝেও কীভাবে এমন ঘটনা ঘটল, তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ইতিমধ্যেই একরকম সিল করে দেওয়া হয়েছে সাংসদের বাড়ি। আরও শক্ত করা হয়েছে নিরাপত্তার বেষ্টনী।
সব থেকে উল্লেখযোগ্য ব্যাপার, সোমবার রাতে বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ছেলে পবন সিংয়ের সঙ্গে ফোনে দীর্ঘক্ষন কথা বললেন এনআইএ-এর এক কর্তা। গত ৮ ই সেপ্টেম্বর সাংসদের বাড়িতে বোমা মারার ঘটনা নিয়ে কথা বলেন তিনি। এনআইএ-র তদন্তকারীরা এসে পৌঁছতে না পৌঁছতেই তারমধ্যেই এদিন ফের বোমাবাজির ঘটনা ঘটে।
এদিন সকালে বিকট শব্দ শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রা। তখনই জানা যায়, সাংসদের বাড়ির পেছনে বোমাবাজি হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাংসদ অর্জুন সিং বলেন. “ওখানে একজন তৃণমূলের বিধায়ক হয়েছেন। বিভিন্ন কারখানা থেকে লোহা চুরি যায়। ওর মাধ্যমে সব কাজ হয়। রাতে চোররা চুরি করে নিয়ে যায়। পুলিশের সামনে দিয়েই। তারাই লোহা নিয়ে যাওয়ার সময়ে বোমা ছুড়তে ছুড়তে চলে যায়। আমি এসপিকে ফোন করেছি। এলাকায় ভয় দেখানো হচ্ছে। এই রাজনীতি আশা করতাম না আমরা। কিন্তু এখন এমনই রাজনীতি করছে তৃণমূল।”
গত বুধবার, সাতসকালে সিআইএসএফ প্রহরার দেড় ফুটের মধ্যেই সাংসদ অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনার ঘটে। ঘটনায় সাংসদের নিরাপত্তা নিয়েই উঠছে একাধিক প্রশ্ন। তবে এই প্রথমবার নয়, ভোট পরবর্তী পর্যায়ে জুলাই মাসেও অর্জুনের বাড়িতে বোমাবাজি হয়। সিআইএসএফ- এর উপস্থিতিতেই বারে বারে এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে সাংসদ অর্জুন সিং এবং তাঁর পুত্র বিধায়ক পবন সিং-এর নিরাপত্তা নিয়ে। এই প্রেক্ষিতে অর্জুনের মন্তব্য, “অমিত শাহ ফোন করে খবর নিয়েছেন। এবার আমার সেল্ফ ডিফেন্সের সময় এসেছে। নিজের আত্মরক্ষা নিজেকেই করতে হবে।”
উল্লেখ্য, সাংসদ অর্জুন সিং ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পান। আর তাঁর ছেলে বিধায়ক পবন সিং ওয়াই ক্যাটাগরি নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকে সিআইএসএফ (CISF)। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে সাংসদের বাড়িতে এবং তার বাড়ির দরজায় মাছিও বসতে পারে না। কেউ প্রবেশ করতে গেলে তার মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেকিং করা হয়।সেই সব নিরাপত্তার বেড়াজাল পেরিয়ে তবেই সবার তবেই প্রবেশের অনুমতি মেলে। এর আগেও তাঁর বাড়ির সামনে হামলার ঘটনায় তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন অর্জুন। এ দিনের ঘটনাতেও তৃণমূলের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি।
এদিকে সাংসদের বাড়ির সামনে থাকে ‘নো পার্কিং জোন’। সেখানে সাধারণের প্রবেশও নিষিদ্ধ। এই অবস্থায় দুষ্কৃতীরা কীভাবে বারে বারে বোমাবাজি করে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে বারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (উত্তর) শ্রীহরি পাণ্ডে জানান, দুইজনকে এই ঘটনায় আটক করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবে চায়ের দোকানে মারামারি নিয়ে ঘটনার সুত্রপাত বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান তদন্তের জন্য প্রয়োজনে সিআইএসএফ-কেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এই বোমাবাজির ঘটনায় অর্জুনের অবশ্য দাবি, ভবানীপুরের ইলেকশনের অবজারভার করেছে দল। তাই জন্য তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর আগেও ১১ বার তাঁকে আক্রমণ করা হয়েছে। বারবার হামলার কারণ তাঁকে মেরে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে। তিনি আরও যোগ করেন, তবে যে ধরনের বোমা চলেছে তা অতি সক্রিয় বোমা। তাই এনআইএ (NIA)-র তদন্তের দাবি জানান সাংসদ অর্জুন সিং।
এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা বরানগরের বিধায়ক তাপস রায় জানিয়েছেন দল যদি অর্জুনকে ভবানীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের অবজারভার করে তাহলে বিজেপি দলের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে ও অর্জুন সিং অবজারভার হওয়ার ফলে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের ব্যবধান অনেক গুণ বাড়বে।
সাংসদের বাড়িতে হামলার ঘটনায় টুইটে সমালোচনা করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর দাবি, রাজ্যে যে এখনও হিংসা অব্যাহত, সাংসদের বাড়িতেই সাতসকালে বোমাবাজিতেই প্রমাণ হল। এর থেকে ভয়ঙ্কর আর কী আছে! সাংসদের নিরাপত্তা ব্য়বস্থা ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: অর্জুনের বাড়িতে বোমাবাজি, তদন্ত করুক NIA, দাবি শুভেন্দুর
আরও পড়ুন: Kamarhati: ছিদ্র ধরতে ব্যর্থ পুরসভা, নকশা না থাকায় পোয়াবারো কলেরার