
বনগাঁ: মহিলাকে খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভাই-বোনের। প্রতিবেশী মহিলাকে খুনের ঘটনায় ভাই-বোনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা-সহ যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত করলো বনগাঁ মহকুমা আদালত। শুক্রবার বিকালে অভিযুক্ত বাকিবুল্লা মন্ডল এবং তারাবানুকে সাজা শোনায় আদালত। ন্যায় বিচার পেয়েছেন বলছেন মৃতা রহিমার মা কবেরা মণ্ডল। বিচার পেয়ে পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।
জানা গিয়েছে, বিয়ের আগে প্রতিবেশি বাকিবুল্লা এবং রহিমার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দুই পরিবার বিষয়টি জানাজানি হতেই তাদের দুজনকেই অন্যত্র বিয়ে দেয়। অভিযোগ, কয়েক বছর পরে নতুন করে তারা আবার সম্পর্কে জাড়ায়। এবং দুই বছর আগে সংসার ছেড়ে বাকিবুল্লা রহিমাকে নিয়ে মুম্বইয়ে চলে যায়। মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে ২০২৩ সালে রহিমার পরিবারের পক্ষ থেকে গোপালনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে বাকিবুল্লা মণ্ডল ও তাঁর দিদি তারাবানু মণ্ডলে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় ধৃতরা জানায় রহিমাকে মুম্বই থেকে নিয়ে এসে বাদুড়িয়ার ইশ্বরি গাছাতে বাকিবুল্লার দিদি তারাবানুর বাড়িতে রেখেছিল। সেখানে বাকিবুল্লার দিদি তারাবানু রহিমাকে শ্বাসরোধ করে খুন করে। খুনের পর দুই দিন ধরে রান্না ঘরে গর্ত করে এবং সেখানে রহিমাকে পুঁতে দেয়। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, রহিমা বাদুরিয়ায় তারাবানুর বাড়িতে থাকাকালীন তাঁর স্বামীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। সেই আক্রশে দিদি ও ভাই মিলে রহিমাকে খুনের পরিকল্পনা করে।
দোষীরা তাঁদের দোষ স্বীকারের পর শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়ার পালা। দীর্ঘদিন বিচার প্রক্রিয়া চলা পর ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে গত বুধবার ধৃত বাকিবুল্লা মণ্ডল এবং তারাবানুকে দোষী সাব্যস্ত করে বনগাঁ মহকুমা আদালত। শুক্রবার দুই ভাই-বোনকে আমৃত্যু কারাবাসের সাজা শোনানোর পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা জরিমানা করল আদালত।
দুই অভিযুক্তর আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজায় খুশি মৃত রহিমার পরিবার। রহিমার মা কবেরা মণ্ডল বলেন, “আমার কোর খালি করে আজ ওদের মায়েরও কোল খালি হল। আজও ন্যায় বিচার পাওয়া যায়, পুলিশ প্রশাসনকে অসংখ্য ধন্যবাদ।”