
সোদপুর: লাল ঝান্ডা রয়েছে। রয়েছে ঘাসফুলের পতাকাও। একইসঙ্গে। একই মিছিলে। মিছিল থেকে স্লোগান উঠল ‘ইনক্লাব জিন্দাবাদ’। আবার উঠল ‘বন্দেমাতরম’ ধ্বনিও। বুধবার দুপুরে এমনই এক দৃশ্য দেখা গেল সোদপুর স্টেশন চত্বরে। হকার উচ্ছেদের প্রতিবাদে একযোগে প্রতিবাদে সামিল লাল ঝান্ডা ও জোড়াফুলের ঝান্ডার ধারক বাহকরা। একসঙ্গে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করল সিটু ও আইএনটিটিইউসি। গোটা সোদপুর স্টেশন পরিক্রম করল মিছিল। আর মিছিলের একেবারে সামনের সারিতে একসঙ্গে শোভা পেল লাল ঝান্ডা ও তৃণমূলের পতাকা।
একদিকে জাতীয় রাজনীতিতে ইন্ডিয়া ব্লক নিয়ে চর্চা হচ্ছে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিরোধীদের মিলিত মঞ্চে এক ছাতার তলায় আসছে সিপিএম-তৃণমূল-কংগ্রেস-সহ অন্য দলগুলি। তখন সোদপুর স্টেশনের এই দৃশ্যে স্বাভাবিকভাবেই চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে এলাকায়। কারণ, জাতীয় রাজনীতির সমীকরণ যাই হোক না কেন, বাংলার প্রাদেশিক সমীকরণ মোটেই মসৃণ নয়। এখানে মহম্মদ সেলিম, সুজন চক্রবর্তীদের অবস্থান স্পষ্ট, বিজেপি ও তৃণমূল উভয়ের বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই। বাংলার মাটিতে অন্তত ঘাস-পদ্মে কোনও ফারাক নেই বামেদের কাছে। ইন্ডিয়া জোটের সমন্বয় কমিটিতে বামেদের কোনও প্রতিনিধি না রাখার সিদ্ধান্তের পিছনেও বাংলার রাজনৈতিক সমীকরণ অন্যতম ফ্যাক্টর বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। সেই জায়গায় সোদপুর স্টেশনে একসঙ্গে মিছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূরণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সিটু নেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্যও বলছেন, এটি আইএনটিটিইউসি ও সিটুর এক যৌথ কর্মসূচি। বললেন, কিছুদিন আগে সোদপুর স্টেশনে একটি নোটিস দেওয়া হয়েছিল হকার উচ্ছেদের বিষয়ে। এরপর সব হকারদের সঙ্গে আলোচনা করে এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর দাবি, পুনর্বাসন ছাড়া কোনও হকারকে উচ্ছেদ করা যাবে না। একই দাবি আইএনটিটিইউসি নেতা প্রবীর পালেরও। তাঁরও বক্তব্য, “হকারদের পেটের তাগিদে, রুজি-রোজগারের জন্য আইএনটিটিইউসি-সিটু যৌথ উদ্যোগে আমাদের আন্দোলন চলবে।” পুনর্বাসন ছাড়া বলপূর্বক হকার উচ্ছেদ যে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না, সে কথাও জানিয়েছেন আইএনটিটিইউসি নেতা।
এদিকে এই যৌথ কর্মসূচিকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি শিবির। এলাকার বিজেপি নেতা জয় সাহা বলছেন, “তৃণমূল তো সিপিএমেরই বি টিম। সিপিএম ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর, সিপিএমের একাংশ এসেই তো তৃণমূলের এজেন্ট হয়েছে। এটা নতুন কিছু নয়। আগে থেকেই এই সেটিং হয়েছে। ফিশ ফ্রাই সেটিং মানুষ আগেই দেখেছে।”