
বনগাঁ: গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুনের ঘটনায় আইনজীবী স্বামী সহ শ্বশুর, শাশুড়ির আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ আদালতের। আমৃত্যু কারাবাস দেওয়ারেরও। শুক্রবার বনগাঁ আদালতের বিচারক (এডিজে ১) কল্লোল কুমার দাসের এই রায় রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, বধূ নির্যাতনে কেসে তিন বছরের জেল এবং এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে এবার গোটা জীবন জেলেই থাকতে হবে মৃতার স্বামী রথীন্দ্রনাথ সেন, শ্বশুর রবীন্দ্রনাথ সেন, শাশুড়ি সুপ্তারানি সেন এবং দেওর রজত সেনকে।
আসল ঘটনার সূত্রপাত ২০২২ সালের ৮ এপ্রিল। বনগাঁ থানার শক্তিগড়ে শ্বশুরবাড়িতে গৃহবধূ প্রিয়া সেন বিশ্বাস ওরফে ইতুকে খুনের অভিযোগ ওঠে। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলে মৃতার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনার পরের দিনই প্রিয়া দেবীর মা মমতা বিশ্বাস বনগাঁ থানায় মেয়ের স্বামী ও তার সঙ্গে শ্বশুর, শাশুড়ি এবং দেওরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেতেই অ্যাকশন নেয় পুলিশ।
কিছু সময়ের মধ্যেই গ্রেফতার করা হয় চারজনকেই। দীর্ঘসময় জেরার পর হয় ঘটনার পুর্ননির্মান। তারপর থেকেই চলছিল শুনানি। চার্জশিট দেয় পুলিশ। এতদিন ধরে চলা সওয়াল জবাবে সবপক্ষেরই যুক্তি খতিয়ে দেখেন বিচারক। যদিও শেষ পর্যন্ত আদালতের রায়ে বৃহস্পতিবারই দোষী সাব্যস্ত হয় চার অভিযুক্ত। এরপরই শুক্রবারই হয়ে গেল সাজা ঘোষণা। মেয়েকে হারিয়ে এখনও শোকস্তব্ধ প্রিয়া দেবীর পরিবারের সদস্যরা। আদালতের রায়ের অপেক্ষায় দিন গুনছিলেন আত্মীয়-পরিজনরা। শেষ পর্যন্ত রায়ে খুশি প্রত্যেকেই। রায়ের কথা শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা মমতা বিশ্বাস। চোখে জল নিয়েই বলেন, “আমার মেয়েকে তো আর কোনওদিন ফিরে পাব না। তবে খুনিরা শেষ পর্যন্ত সাজা পেয়েছে। এতেই আমি খুশি।”