হাড়োয়া: আর পাঁচটা দাম্পত্য কলহের মতোই ওঁদের ঝামেলা হয়েছিল। রাগ-অভিমান সবই ছিল। পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরাই বলছেন, আপাত শান্তই ছিল দম্পতি। কিন্তু ইদানীং কোনও একটি বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য চলছিল। তাতে দু’দিন আগে স্ত্রী অভিমান করে বাবার বাড়িতে চলে যান। কিন্তু তাতে যে স্বামী এমন কোনও পদক্ষেপ করতে পারেন, তা কখনই মাথায় আসেনি তাঁর। সকাল ১০টায় স্বামীকে ছেড়ে রাগ করে বাবার বাড়িতে গিয়েছিলেন স্ত্রী। দুপুর আড়াইটে নাগাদই যায় তাঁর কাছে চরম খবর। গলায় ফাঁস লাগিয়েছেন স্বামী। ফোন পেয়েই দ্রুত চলে আসেন স্ত্রী। কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। স্ত্রী সঙ্গে অশান্তিতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী এক যুবক। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের হাড়োয়া থানার সোনাপুকুর-শংকরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধুতুরাপোতা গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম প্রসেনজিৎ মণ্ডল। পেশায় তিনি মোটর মেকানিক।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আঠাশের বিবাহিত যুবক প্রসেনজিৎ মণ্ডলের সঙ্গে স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক সমস্যা হয়। তা নিয়ে বেশ কিছুক্ষণের অশান্তি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রসেনজিতের স্ত্রী অভিমান করে বাপের বাড়ি চলে যান। স্ত্রী চলে যাওয়ার পর খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে ঘরের চলে যান যুবক।
দুপুরে খাওয়ার জন্য পরিবারের সদস্যরা দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকি করেও কোন সাড়াশব্দ না পাওয়ায় হাড়োয়া থানায় খবর দেন। তারপর পুলিশ গিয়ে দেখে যুবক ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। দেহটি উদ্ধার করে হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইতিমধ্যে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু করেছে হাড়োয়া থানার পুলিশ।
শুধুই কি স্ত্রীর সঙ্গে ঝামেলায় যুবক এই সিদ্ধান্ত নিলেন? নাকি এর পেছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে, সেটিও খতিয়ে দেখছে হাড়োয়া থানার পুলিশ। পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, বিয়ের পর বেশ ভালো ভাবেই তাদের সংসার চলছিল। এমনকি তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে। ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।