
বারাসত: বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে মৃতের চোখ ‘চুরি’ বিতর্ক! আর এই ঘটনার তদন্তে নেমে ক্রমেই বেআব্রু হচ্ছে হাসপাতালের মর্গের বেহাল অবস্থা। অভিযোগ, দেহ ফেলে রাখা হয় মেঝেতে। প্রত্যেকটি কুলার মেশিন খারাপ। মর্গে ইঁদুরের দাপাদাপি! সেকথা অবশ্য স্বীকার করেছেন মর্গের অস্থায়ী কর্মী। জানা গিয়েছে, মর্গের ১০টি ফ্রিজই খারাপ। বুধবার দ্বিতীয়বার মৃত প্রীতম ঘোষের দেহের ময়নাতদন্ত হবে। হাসপাতালে এসে পৌঁছেছে তিন সদস্যের কমিটির সদস্যরা। জেলা ম্যাজিস্ট্রিটের উপস্থিতিতে হবে ময়নাতদন্ত। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফি হবে।
এদিকে, মঙ্গলবারের পর বুধবারও হাসপাতাল বিক্ষোভ দেখান পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের অভিযোগ, কেবল চোখ নয়, আরও অঙ্গ প্রত্যঙ্গও চুরি হয়ে যেতে পারে। দেহ পুরো দেখানো হচ্ছে না তাঁদের। পরিবারের এক সদস্য বলেন, “আমাদের গোটা দেহটাই দেখাক। দেখব আমরা সব অঙ্গ আদৌ রয়েছে কিনা। তাহলে আমরা সমস্ত আশ্বাস মানব। পুলিশ আটকে দিচ্ছে। হাসপাতালের কেউ কোনও জবাবই দিচ্ছে না।”
আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, “আমরা একটা চোখ পাইনি। আমাদের দেহ পুরো দেখাতে হবে, তারপরই দেহ নেব।” মৃত প্রীতমের মা, “আচ্ছা বলতে পারে, মর্গে কেন দেহের চোখে তুলসি পাতা থাকবে? কে দিল? আমরা বিচার চাই। আমার ছেলের দুটো চোখই ছিল। একটা চোখ ছিল না। সেটা কি বিক্রি করা হয়েছে?”
যদিও মর্গের এক কর্মীর দাবি, মর্গের ভিতর প্রচুর ইঁদুর হয়েছে। সেক্ষেত্রে ইঁদুর চোখ খুবলে খেয়েছে কিনা, সেটাও তদন্তসাপেক্ষ। সে প্রসঙ্গে মৃতের মা বলেন, “ইঁদুর চোখ খেলে ক্ষতবিক্ষত হয়ে থাকত জায়গা। ওটা অপারেশন করেই তুলে নেওয়া হয়েছে। চোখে তুলসি পাতা ছিল।” মৃতের দিদি বললেন, “মর্গের থেকে চোখে তুলসি পাতা দিয়ে বের করে, কোথাও শুনেছেন? তুলসি পাতা তো আমরা দেব। তুলসি পাতা এল কোথা থেকে? ”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বারাসত মেডিক্যাল কলেজের মর্গ থেকে কাজীপাড়ার বাসিন্দা প্রীতম ঘোষের দেহ বার করে সৎকার্যের নিয়ে যাচ্ছিল পরিবার। তখনই তাঁরা দেখেন, চোখ উধাও, মুখের একপাশে পড়ে তুলসি পাতা! ধুন্ধুমারকাণ্ড বাধে। মঙ্গলবারই ওই সময়ই যশহর রোড দিয়ে ফিরছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রোগীর পরিজনদের ক্ষোভের মাঝে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। বিক্ষোভকারীরা মুখ্য়মন্ত্রীকে গোটা বিষয়টি জানান। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।