ভিড়ে ঠাসা প্ল্যাটফর্মের এক কোণে দেখা যাচ্ছিল দু’টি পা, এগিয়ে যেতেই আঁতকে উঠলেন যাত্রীরা
এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) ওই শ্রমিক নেতার পরিবার।
বসিরহাট: কর্মস্থল আগরপাড়া। অথচ মৃতদেহ মিলল হাড়োয়া স্টেশনে (Haroa Rail Station)। দেড় দিন নিখোঁজ থাকার পর রেল স্টেশন থেকে উদ্ধার হল তৃণমূল নেতার মৃতদেহ। এই মৃত্যু ঘিরে ইতিমধ্যেই দানা বাঁধছে রহস্য। স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি এর পিছনে অন্য কোনও ঘটনা রয়েছে তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মৃত্যু নিয়ে ধন্দে মৃতের পরিবারও।
টিটাগড় স্টিল ফ্যাক্টরিতে কাজ করতেন শ্যামল ঘোষ। আগরপাড়ার তৃণমূল শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা ছিলেন তিনি। পানিহাটি এলাকায় তাঁকে এক ডাকে সকলেই চেনেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে কারখানা থেকে বের হওয়ার পর বাড়িতে কথা বলেছিলেন শ্যামলবাবু। অদ্ভূতভাবে এর পর আর তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি বাড়ির লোকজন। রাত গভীর হলেও বাড়ি ফেরেননি এই তৃণমূল নেতা।
শুক্রবারও দিনভর খোঁজ চলে তাঁর। সন্ধ্যার দিকে বসিরহাট মহকুমার শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখার হাড়োয়া রোড স্টেশনের প্ল্যাটফর্ম থেকে শ্যামল ঘোষের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। শ্যামল ঘোষের ছেলে নিলয় ঘোষ জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে কারখানা থেকে বেরোনোর পর আর বাবার খোঁজ পাননি। তাঁরা থানায় গেলে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করে জানতে পারেন, নিউ ব্যারাকপুর স্টেশনে রাত ১২টা নাগাদ ছিলেন শ্যামলবাবু। তারপর মোবাইল ফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার হাড়োয়া রোড প্ল্যাটফর্ম থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে জিআরপি। দেহ প্রথমে হাড়োয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর তাঁর মোবাইল ফোনের কল লিস্ট ধরে হাড়োয়া থানার পুলিশ আধিকারিকরা পরিবারের লোককে খবর দেয়।
আরও পড়ুন: সোয়াইন ফ্লু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সোহম
মৃত শ্যামল ঘোষের ছেলে নিলয় ঘোষের কথায়, তাঁর বাবা আগরপাড়া থেকে হাড়োয়া স্টেশনে কী করে পৌঁছলেন সেটাই স্পষ্ট নয়। তাঁর প্রশ্ন, যে মানুষটা সাড়ে ১২টা অবধি নিউ ব্যারাকপুরে ছিলেন, কী করে তিনি হাড়োয়া গেলেন। এত রাতে ট্রেনে পৌঁছনো আদৌ কি সম্ভব? সেক্ষেত্রে যোগাযোগের মাধ্যম কী, প্রশ্ন তাঁর। ধন্দ রয়েছে, চালু মোবাইল মুহূর্তে কী ভাবে বন্ধ হয়ে গেল তা নিয়েও। সূত্রের খবর, শ্যামলবাবুর কাছে ব্যাঙ্কের বই-সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু নথি ছিল। সেগুলিও পাওয়া যাচ্ছে না। শনিবার বসিরহাট জেলা হাসপাতালে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সব দিক খোলা রেখেই চলছে তদন্ত।