
মধ্যমগ্রাম: রবিবার মধ্যরাতে মধ্যমগ্রামে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় তৈরি হয় একাধিক জল্পনা। উত্তর প্রদেশ থেকে একজন যুবক কেন আইইডি নিয়ে হঠাৎ হাজির হলেন মধ্যমগ্রামে, তা নিয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। রবিবার রাতে আইইডি বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃত্য়ু হয় সচ্চিদানন্দ মিশ্র নামে ওই যুবকের। সেই ঘটনায় পুলিশের তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। যে ঘটনায় নাশকতার আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তাতে আদতে ত্রিকোণ প্রেমের তত্ত্ব পেল পুলিশ।
রবিবার রাতে মধ্যমগ্রামে হাইস্কুলের পাশে বিস্ফোরণ হয়। সচ্চিদানন্দকে ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ, ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সোমবার সকালে হাসপাতালেই মৃত্য়ু হয়েছে তাঁর। তবে পুলিশ সূত্রের খবর, মৃত্যুর আগে সচ্চিদানন্দ স্বীকার করেছেন যে তিনি ব্যাগে করে বোমা এনেছিলেন। এমনকী ওই বোমা তিনিই বানিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। কিন্তু উত্তর প্রদেশ থেকে কেন হঠাৎ বোমা নিয়ে বাংলায়?
পুলিশ সব খোঁজ খবর নিয়ে জানতে পেরেছে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচিতি হওয়ার পর এক মহিলার সঙ্গে ওই যুবকের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় আর সেই মহিলা থাকতেন মধ্যমগ্রামে। বিবাহিত প্রেমিকার জন্যই ছুটে এসেছিলেন বাংলায়! পুলিশ জানিয়েছে, সেই বিবাহিত প্রেমিকার স্বামীকে খুন করতেই নাকি বোমা নিয়ে মধ্যমগ্রামে হাজির হয়েছিলেন সচ্চিদানন্দ।
ওই মহিলাকে আটক করে তদন্তকারী এসটিএফ টিম জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তাঁর স্বামীকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে যে ঘটনাস্থলের আশপাশেই ওই মহিলার বাড়ি। সচ্চিদানন্দের জন্য তাঁর স্বামীর সঙ্গে বারবার মনোমালিন্য হয়েছে। পুলিশের অনুমান, নিজের প্রেমিকার অপমান, অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই তাঁর স্বামীকে খুন করার প্ল্যান নিয়ে বাংলায় চলে আসেন ওই যুবক। তবে তদন্তকারী আধিকারিকরা মনে করছেন সচিদানন্দকে তাঁর প্রেমিকাও যথেষ্ট সহযোগিতা করেছে।
আইটিআই-তে পড়াশোনা করা সচ্চিদানন্দ নিজেই ওই বিস্ফোরক নিজেই বানিয়েছিলেন বলেও জানা গিয়েছে। পুলিশ জানাচ্ছে, একটি পেনের মত ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে বিস্ফোরক বানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ভুল বাটনে চাপ দিতেই ঘটে যায় অঘটন, বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যান যুবকের শরীর।
পুলিশ জানতে পেরেছে আগেও একাধিকবার উত্তর প্রদেশ থেকে মধ্যমগ্রামে এসেছেন এই যুবক। চলতি বছরের গত এপ্রিল মাসে এসে বেশ কয়েকদিন থেকেও গিয়েছিলেন। এক্ষেত্রে পুলিশের অনুমান যখনই ওই মহিলার স্বামী যখন বাইরে কোনও কাজের জন্য যেতেন, তখনই ওই সচ্চিদানন্দ মধ্যমগ্রামে এসে থাকতেন। গত তিনদিন ধরে সচিদানন্দ মধ্যমগ্রাম এলাকাতেই ছিলেন। রবিবার রাতেই মহিলার স্বামীকে শেষ করে দেওয়ার প্ল্যান ছিল তাঁর, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হল সচ্চিদানন্দেরই।