বারাসত: শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমতে শুরু করেছে, হু হু করে বাড়ছে কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ। এমন অবস্থা নিয়েই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। বাঁচার আশাও ক্ষীণ ছিল বলে মনে করেছিলেন চিকিৎসকেরা। সেই অবস্থা থেকে সুস্থ জীবনে ফিরল মা ও সন্তান। আজ, বুধবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন হাসপাতাল থেকে ছাড়া হল তাঁদের। এমন ঘটনা বিরল তো বটেই, রাজ্যে এমন ঘটনা প্রথম বলে জানিয়েছেন বারাসাত মেডিকেল কলেজ ও হাসাপাতালের সুপার। চিকিৎসকদের সাহায্যেই সন্তানকে পেয়েছেন বলে জানালেন সদ্য মা হওয়া ওই মহিলা। গত ১ মার্চ তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। সেই সময় ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি।
জানা গিয়েছে, গুরুতর শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে ওই মহিলা ভর্তি হন বারাসত মেডিক্যাল কলেজে। সঙ্গে ছিল খিঁচুনির সমস্যাও। পরিস্থিতি বুঝে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর মহিলার ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করা হয় সঙ্গে সঙ্গে। রাখা হয় সিসিইউতে। ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় ইউএসজি-র মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখা যায়, ভিতরে তখনও প্রাণ আছে সন্তানের। তখনই চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত নেন দ্রুত অস্ত্রোপচার করা প্রয়োজন।
ওই দিনই পরিবারের সম্মতি নিয়ে রীতা সাহা নামে ওই রোগীর সিজার করা হয়। ভেন্টিলেশনে থাকা কোন রোগীকে এইভাবে র অজ্ঞান করে সিজার করার এই ঘটনা পশ্চিমবঙ্গে আগে কখনও ঘটেনি বলেই জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার সুব্রত মণ্ডল।
এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন ওই মহিলা, যার ওজন হয় ১৬০০ গ্রাম। মা ও শিশু দুজনেই ভাল আছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। বুধবার তাঁদের বারাসত হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সুপার সুব্রত মণ্ডল দাবি করেন, পরিবারের লোক সেই সময় আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন, তাতেও বিপদ বাড়তে পারত বলেই মনে করেন তিনি। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়ে ওই অন্তঃসত্ত্বা মহিলার সিজার করার ব্যবস্থা করেন।
হাসপাতাল সুপার আরও জানান, ভর্তি করার সময় রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা ছিল ৩০-৩৫। সন্তান প্রসব তো দূরের কথা! রোগী বাঁচবেন কি না, সেটাই প্রশ্ন ছিল। তিনি বলেন, ‘আমরা একদম নষ্ট করিনি। আধ ঘণ্টার মধ্যে সিদ্ধান্ত নিই।’