উত্তর ২৪ পরগনা: অনেকক্ষণ ধরেই কলিং বেল বাজান। কিন্তু কোনও সাড়া শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। বাইরের গেটে তালা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢোকেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ আধিকারিকরা। অনেকবার কড়া নাড়াতে দরজা খোলেন বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ়া। নাম শিপ্রা চক্রবর্তী। ছত্তীসগঢ়ের মাওবাদী নাশকতার তদন্তে সোদপুরের এক প্রৌঢ়ার বাড়িতে এনআইএ। এলাকায় তিনি মানবাধিকার কর্মী বলেই পরিচিত। মঙ্গলবার সকালে পানিহাটি পল্লিশ্রী এলাকায় শিপ্রা চক্রবর্তী নামে মহিলার বাড়িতে হানা দেন আধিকারিকরা। রয়েছেন চার জন আধিকারিক।
এই খবর যখন প্রকাশিত হচ্ছে, তখন বাড়ির ভেতরে তল্লাশি চালাচ্ছেন এনআইএ আধিকারিকরা। গোটা এলাকা ধীরে রেখেছে ঘোলা থানার পুলিশ। বাড়ির বাইরে মোতায়েন রয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
এনআইএ সূত্রে খবর, শিপ্রা চক্রবর্তী ও তাঁর স্বামী মানবেশ চক্রবর্তী মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা পানিহাটি পৌরসভার ৩১ নম্বর ওয়ার্ড পল্লীশ্রী এলাকার ওই বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরেই থাকেন। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, এলাকায় সকলের সঙ্গে মেলামেশা করতেন এই দম্পতি। তাঁদের আচরণে কোনও অস্বাভাবিকত্ব তাঁরা আগে কখনও দেখেননি। বাড়ির ভেতর এনআইএ-এর আধিকারিকরা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছেন।
প্রসঙ্গত, এনআইএ সূত্রে খবর, উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন জঙ্গিগোষ্ঠীর কাছ থেকে অস্ত্র ও লজিস্টিক কিনে বাংলা বিহার ঝাড়খণ্ড যাওয়ার একটি নেটওয়ার্ক সক্রিয় ছিল। বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চালাচ্ছে এনআইএ। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, এ রাজ্যের একাধিক ব্যক্তি এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদেরকে আর্বান নকশাল বলে অভিহিত করছে এনআইএ।
এর আগে এই মামলাতেই সিপিআই মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, তথা রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক সব্যসাচী গোস্বামী ওরফে কিশোরদাকে গ্রেফতার করে এনআইএ। কিশোরদা ছাড়াও গ্রেফতার করা হয় জয়িতা দাস-সহ আরও তিন জনকে। অসমে বরাক উপত্যকা থেকে গ্রেফতার করা হয় কাঞ্চনদাকে। সেখান থেকেই হদিশ মেলে নেটওয়ার্কের।