সন্দেশখালি: দিনটা ছিল শুক্রবার। সন্দেশখালির হাজার হাজার মহিলা বাঁশ, লাঠি, গাছের ডাল, ডাসা হাতে বেরিয়েছিলেন রাস্তায়। একেবারে রণংদেহি মূর্তি! সেদিন গোটা বাংলা দেখেছিল সন্দেশখালির প্রত্যন্ত একটা গ্রামের মহিলারা ঠিক কী করে দেখাতে পারেন! যে গ্রামের নাম আগে শোনেনি মানুষ, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাংলার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। দুই নেতা, সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শিবু হাজরা, ও জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব অভিযোগ করতে থাকেন তাঁরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও যা দাবি করেন, তা শিউরে ওঠার মতো। সেদিন যাঁরা মিডিয়ার সামনে এসে বিস্ফোরক দাবি, করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন যুথিকা রায়। সেদিন তিনিও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন, কীভাবে গ্রামের মহিলারা অত্যাচারিত হয়, শিশুদের রাজনীতিতে এনে হাতে বন্দুক ধরিয়ে দেওয়া হয়, তা বলেছিলেন। আজ সন্দেশখালির কিছু কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি। TV9 বাংলার মুখোমুখি সেই যুথিকা। তিনি বললেন, আজও অত্যাচার হচ্ছে।
যুথিকা রায় অভিযোগ করেন, এখনও তাঁকে টার্গেট করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ। কাল রাতেও হামলার প্ল্যান ছিল। আমার বাড়ির পাশে নদী। বোটে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। রাতে আমাদের গ্রামের মেয়েরা জেগে ওঠে। দুষ্কৃতীরা যখন বুঝতে পারে মেয়েরা জেগে রয়েছে, তখন পালায়।”
গ্রামের সেই দাদা, শিবু- যাকে নিয়ে এত কাণ্ড, তাঁর সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন,
“আজ দাদা, শিবু দা আড়াল থেকে বলছে, আমি কোনও অন্যায় করিনি। মায়েরা নাকি তাকে ভালোবাসে। আমি অস্বীকার করছি না। অনেকে মায়েরাই তাকে ভালোবাসে। সেই ভালোবাসার জায়গাটা কিন্তু অন্যরকম ছিল। সেই ভালোবাসার জায়গাটা বাঁধিয়ে রাখার মতো মনে হয়। কিন্তু আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, উনি এত ভোলাবাসার জায়গা ছেড়ে কেন লুকিয়ে রয়েছেন? তাহলে ভালোবাসার মানুষদের বাদ দিয়ে ও কেন লুকিয়ে রয়েছে? পুলিশ ওকে খুঁজে পাচ্ছে না, কিন্তু মিডিয়া খুঁজে পেয়ে যাচ্ছে!” পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “যারা অপরাধী, পুলিশ তাদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। পুলিশ কাকে প্রোটেকশন দিতে আসছে? যাদের বাড়িতে থাকছে, তাদের হয়ে গান গাইবে? নাকি আমার হয়ে? আমাকে এই জবাব দিতে হবে। ”
পুলিশ কী কোনওভাবেই সাহায্য করছে না? প্রশ্ন করতেই ফোঁস করলেন যুথিকা। বললেন, ” গ্রামের ভিতর যা ঘটছে, সেটা পুলিশ দিয়েই করানো হচ্ছে। পুলিশ গিয়ে দরজায় যদি কড়া নাড়ে, তাহলে তো ভয় লাগবেই। আমরা আন্দোলনটা চালাব কীভাবে?” মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশেও তিনি বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের কথা না বলে দিদি শাহজাহান শিবু হাজরা তুলে নিক। ভোটে অন্য মুখ দিয়ে দেখুক, কী হচ্ছে আমাদের এখানে। অন্য দলকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। দিদিকে আমরা সবাই সম্মান জানাব। আমরা যাদের ওপর ভরসা হারিয়েছি, তাদের তুলে নিক। দিদি কেন শেখ শাহজাহানদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন? ওঁ তো একজন নারী, তাহলে আমাদের সাপোর্ট না করে ওই দুটো পুরুষকে কেন আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন?” আরও সাহসী কন্ঠে বললেন যুথিকা।
কিন্তু যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা কেন মুখ ঢেকে রয়েছেন? যুথিকা বলেন, “মহিলারা মুখ ঢেকেছে আজ পরিবারের কথা ভেবে। কারণ মহিলাদের কিছু করতে গেলে ভাবতে হবে। কিন্তু ওকে চিহ্নিত করে স্বামী-সন্তানদের তুলে নিয়ে যাবে। ওই মহিলা তখন কী করবে? তাই মিডিয়ার সামনে মুখ ঢেকে আসছে। আজ মিডিয়া পাশে রয়েছে, এরপর কী হবে?” যুথিকার কথায়, “সন্দেশখালিতে পুলিশ প্রশাসন বলে কিছু আছে? থানায় গেলে বলে জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে লাভ নেই। আমি থানায় গিয়েছিলাম, বলেছিল, যাও পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে নেও! ”
যুথিকা পাল্টা প্রশ্ন করেন, “যাদের জবানবন্দি দিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের কি লাইভ রিস্ক থাকছে না? যারা সাধারণ মানুষ, তাদের গ্রেফতার করা হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের ধরতে গেলে জবানবন্দি দিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।” তাঁরই পাল্টা প্রশ্ন, “এত মহিলা কি তাহলে মিথ্যা কথা বলছে?”
এখন গ্রামে ভিড় জমাচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা, কেন্দ্রীয় দল আসছে। জায়গায় জায়গায় জারি ১৪৪ ধারা। বর্তমানে ঘরেই রয়েছেন মহিলারা। কিন্তু তাতে যুথিকা জানিয়ে দিলেন, “আন্দোলন থামবে না। এমনও হচ্ছে, বাড়ির বউ আন্দোলনে নেমেছে বলে স্বামীকে দিয়ে মারও খাওয়াচ্ছেন। কিন্তু আন্দোলন থামবে না। আমরা এখানে কোনও রাজনৈতিক দল চাইছি না।” মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর প্রশ্ন, “কেন অপরাধীদের আড়াল করছেন? একবার এখানে আসুন। ওদের তুলে নিন। এখানে নতুন মুখ দিয়ে দেখুন, কী হতে পারে সন্দেশখালিতে!”
সন্দেশখালি: দিনটা ছিল শুক্রবার। সন্দেশখালির হাজার হাজার মহিলা বাঁশ, লাঠি, গাছের ডাল, ডাসা হাতে বেরিয়েছিলেন রাস্তায়। একেবারে রণংদেহি মূর্তি! সেদিন গোটা বাংলা দেখেছিল সন্দেশখালির প্রত্যন্ত একটা গ্রামের মহিলারা ঠিক কী করে দেখাতে পারেন! যে গ্রামের নাম আগে শোনেনি মানুষ, কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাংলার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। দুই নেতা, সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি শিবু হাজরা, ও জেলা পরিষদের সদস্য উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক সব অভিযোগ করতে থাকেন তাঁরা। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও যা দাবি করেন, তা শিউরে ওঠার মতো। সেদিন যাঁরা মিডিয়ার সামনে এসে বিস্ফোরক দাবি, করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজন যুথিকা রায়। সেদিন তিনিও বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন, কীভাবে গ্রামের মহিলারা অত্যাচারিত হয়, শিশুদের রাজনীতিতে এনে হাতে বন্দুক ধরিয়ে দেওয়া হয়, তা বলেছিলেন। আজ সন্দেশখালির কিছু কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি। TV9 বাংলার মুখোমুখি সেই যুথিকা। তিনি বললেন, আজও অত্যাচার হচ্ছে।
যুথিকা রায় অভিযোগ করেন, এখনও তাঁকে টার্গেট করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “আমাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ। কাল রাতেও হামলার প্ল্যান ছিল। আমার বাড়ির পাশে নদী। বোটে এসেছিল দুষ্কৃতীরা। রাতে আমাদের গ্রামের মেয়েরা জেগে ওঠে। দুষ্কৃতীরা যখন বুঝতে পারে মেয়েরা জেগে রয়েছে, তখন পালায়।”
গ্রামের সেই দাদা, শিবু- যাকে নিয়ে এত কাণ্ড, তাঁর সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন,
“আজ দাদা, শিবু দা আড়াল থেকে বলছে, আমি কোনও অন্যায় করিনি। মায়েরা নাকি তাকে ভালোবাসে। আমি অস্বীকার করছি না। অনেকে মায়েরাই তাকে ভালোবাসে। সেই ভালোবাসার জায়গাটা কিন্তু অন্যরকম ছিল। সেই ভালোবাসার জায়গাটা বাঁধিয়ে রাখার মতো মনে হয়। কিন্তু আমার প্রশ্নটা হচ্ছে, উনি এত ভোলাবাসার জায়গা ছেড়ে কেন লুকিয়ে রয়েছেন? তাহলে ভালোবাসার মানুষদের বাদ দিয়ে ও কেন লুকিয়ে রয়েছে? পুলিশ ওকে খুঁজে পাচ্ছে না, কিন্তু মিডিয়া খুঁজে পেয়ে যাচ্ছে!” পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “যারা অপরাধী, পুলিশ তাদের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। পুলিশ কাকে প্রোটেকশন দিতে আসছে? যাদের বাড়িতে থাকছে, তাদের হয়ে গান গাইবে? নাকি আমার হয়ে? আমাকে এই জবাব দিতে হবে। ”
পুলিশ কী কোনওভাবেই সাহায্য করছে না? প্রশ্ন করতেই ফোঁস করলেন যুথিকা। বললেন, ” গ্রামের ভিতর যা ঘটছে, সেটা পুলিশ দিয়েই করানো হচ্ছে। পুলিশ গিয়ে দরজায় যদি কড়া নাড়ে, তাহলে তো ভয় লাগবেই। আমরা আন্দোলনটা চালাব কীভাবে?” মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশেও তিনি বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের কথা না বলে দিদি শাহজাহান শিবু হাজরা তুলে নিক। ভোটে অন্য মুখ দিয়ে দেখুক, কী হচ্ছে আমাদের এখানে। অন্য দলকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। দিদিকে আমরা সবাই সম্মান জানাব। আমরা যাদের ওপর ভরসা হারিয়েছি, তাদের তুলে নিক। দিদি কেন শেখ শাহজাহানদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন? ওঁ তো একজন নারী, তাহলে আমাদের সাপোর্ট না করে ওই দুটো পুরুষকে কেন আড়াল করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন?” আরও সাহসী কন্ঠে বললেন যুথিকা।
কিন্তু যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাঁরা কেন মুখ ঢেকে রয়েছেন? যুথিকা বলেন, “মহিলারা মুখ ঢেকেছে আজ পরিবারের কথা ভেবে। কারণ মহিলাদের কিছু করতে গেলে ভাবতে হবে। কিন্তু ওকে চিহ্নিত করে স্বামী-সন্তানদের তুলে নিয়ে যাবে। ওই মহিলা তখন কী করবে? তাই মিডিয়ার সামনে মুখ ঢেকে আসছে। আজ মিডিয়া পাশে রয়েছে, এরপর কী হবে?” যুথিকার কথায়, “সন্দেশখালিতে পুলিশ প্রশাসন বলে কিছু আছে? থানায় গেলে বলে জলে থেকে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করে লাভ নেই। আমি থানায় গিয়েছিলাম, বলেছিল, যাও পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে নেও! ”
যুথিকা পাল্টা প্রশ্ন করেন, “যাদের জবানবন্দি দিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাদের কি লাইভ রিস্ক থাকছে না? যারা সাধারণ মানুষ, তাদের গ্রেফতার করা হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের ধরতে গেলে জবানবন্দি দিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।” তাঁরই পাল্টা প্রশ্ন, “এত মহিলা কি তাহলে মিথ্যা কথা বলছে?”
এখন গ্রামে ভিড় জমাচ্ছেন রাজনৈতিক নেতারা, কেন্দ্রীয় দল আসছে। জায়গায় জায়গায় জারি ১৪৪ ধারা। বর্তমানে ঘরেই রয়েছেন মহিলারা। কিন্তু তাতে যুথিকা জানিয়ে দিলেন, “আন্দোলন থামবে না। এমনও হচ্ছে, বাড়ির বউ আন্দোলনে নেমেছে বলে স্বামীকে দিয়ে মারও খাওয়াচ্ছেন। কিন্তু আন্দোলন থামবে না। আমরা এখানে কোনও রাজনৈতিক দল চাইছি না।” মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর প্রশ্ন, “কেন অপরাধীদের আড়াল করছেন? একবার এখানে আসুন। ওদের তুলে নিন। এখানে নতুন মুখ দিয়ে দেখুন, কী হতে পারে সন্দেশখালিতে!”