সন্দেশখালি: এক সপ্তাহ হতে চলল জ্বলছে সন্দেশখালি। গ্রামের মহিলাদের একাংশ পথে নেমেছেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান, শিবু হাজরাদের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, রাত্রিবেলা পার্টি অফিসে ডেকে নিয়ে অত্যাচার করা হত। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে তোলপাড় বাংলার রাজ্য-রাজনীতি। শাসক-বিরোধী উভয়ই নেমেছে তরজায়। এর মধ্যেই ফের মুখ খুললেন সন্দেশখালির আরও এক মহিলা। তিনি এই সকল মিটিং গুলোর সাক্ষী। গতকাল টিভি ৯ বাংলাকে অকপট ওই মহিলা জানালেন, রাত্রি ১০টার সময় মিটিং ডাকতেন শিবু। তা চলত রাত বারোটা-একটা পর্যন্ত। মিটিংয়ে ঠিক কী কী হত সেই সবও জানিয়েছেন ওই নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মহিলা।
সন্দেশখালিতেই বাড়ি এই মহিলার। তাঁর উপর দায়িত্ব থাকত পার্টির মিটিংয়ে লোক জোগাড় করার। তিনি জানিয়েছেন, মূলত, বুথ ভিত্তিক মিটিং গুলো চলত। আর প্রতিটি বুথের দায়িত্বে থাকা নেতা-নেত্রীদের কাজ ছিল লোক জোগাড় করার। মহিলা বলেছেন, “যদি কখনও লোক কম আসত তখনই দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করত তোমার এলাকা থেকে কেন লোক কম এসেছে? তারপর বলত তুমি আজ রাতে ২০০ লোক নিয়ে এসো। তার মধ্যে ছেলে-মেয়ে সকলেই থাকত। আমি পার্টি অফিসে তোমাদের নিয়ে মিটিং করব।”
পার্টির মিটিং রাত্রিবেলা কেন? সে প্রসঙ্গে উত্তর দিতে গিয়ে ওই মহিলা হেসে বলেছেন, “সে তো বলতে পারব না। তবে শিবুদাই বলত রাতে লোক নিয়ে এসো। তারপর মিটিং হত।” সন্দেশখালির বাসিন্দা নিজেও স্বীকার করেছেন, কখনও কখনও রাত ১০টা থেকে মিটিং শুরু হত। তা চলত ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত।
এত রাতে মিটিং ডাকা নিয়ে কেন কেউ প্রতিবাদ করেনি? শিবু হাজরার মিটিংয়ে উপস্থিত মহিলা জানিয়েছেন, “ওরাই শেষ কথা। ওদের মুখের উপর কে কী বলবে? এখন যেহেতু বেপাত্তা সেই কারণে লোকে মুখ খুলছে। আর এটা সত্যি যে ওরা জোর করে জমি নিয়ে নিত।” তিনি আরও বলেছেন, “আর সকল মহিলারা যে অভিযোগ করছেন সেটা কিছুটা ঠিক। তবে উভয়ের ইচ্ছা না থাকলে কিছু হয় না। আর মেয়েরা ইচ্ছা-অনিচ্ছা কিছুই প্রকাশ করতে পারে না।” এর আগে আরও এক মহিলা শিবু হাজরার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে গিয়ে বলেছিলেন, “আমাদের ছোটো ছোটো বাচ্চাগুলোর স্কুল যাওয়া বন্ধ করিয়ে জোর করে রাজনীতিতে নামিয়েছে ওরা। বাড়ির মেয়েদের কোনও সম্মান দেয়নি। মেয়েদের শেষ করে ফেলেছে। রাত সাড়ে দশটার সময়ে মেয়েদেরকে উঠয়ে আনত পার্টি অফিসে। আজ আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে।”
যদিও, গা ঢাকা দেওয়ার আগে শিবু হাজরা টিভি ৯ বাংলাকে জানিয়েছিলেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ মিথ্যা।