SIR In WB: ২০০২ সালে যাঁদের নাম নেই, তাঁদেরও আর ভয় নেই! ফোনে আসতে শুরু করে বিশেষ মেসেজ
CAA: দেশের শীর্ষ আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে, যাঁদের কাছে নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট থাকবে, তাঁরা আবেদন করতে পারবেন। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর তড়িঘড়ি সার্টিফিকেট আসতে শুরু করেছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রাতারাতি হাজার হাজার মানুষের মোবাইলে মেসেজ এসে সার্টিফিকেট আসার।

উত্তর ২৪ পরগনা: এসআইআর আবহে সব থেকে বেশি আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন মতুয়ারা। তাঁদের আশ্বস্ত করেছেন মতুয়া মহাসঙ্ঘের সভাধিপতি শান্তনু ঠাকুর। তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, নাগরিকত্বের আবেদন করলেই সেই ডকেট নাম্বার দিয়ে ভোটার লিস্টে নাম তুলে দেওয়া যাবে। আর সে কারণে ঠাকুরনগরে দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এসে নাগরিকত্বের আবেদন করেন। হিন্দুত্বের কার্ড করার জন্য লাইন দিতে শুরু করেন। ঠাকুরবাড়ির ক্যাম্পে ভিড় হতে থাকে হাজার হাজার মানুষের। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, নাগরিকত্বের আবেদন করলেই ভোটার লিস্টে নাম তোলা যাবে না। অর্থাৎ প্রথমে নাগরিক হতে হবে, তারপরই তাঁরা ভোটাধিকার পাবেন।
সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর তড়িঘড়ি সার্টিফিকেট আসতে শুরু করেছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে রাতারাতি হাজার হাজার মানুষের মোবাইলে মেসেজ এসে সার্টিফিকেট আসার। এরমধ্যে অনেকের ২০০২ সালে নাম নেই, তাঁরা আর ভয় পাচ্ছেন না। সার্টিফিকেট পাওয়া এক প্রৌঢ়া দুলালী মণ্ডল বললেন, “হাতে পাচ্ছিলাম না বলে একটু দুশ্চিন্তায় ছিলাম। এখন হিয়ারিংয়ে ডাকলে তো আর কোনও সমস্যা নেই। এটা দেখিয়ে দিলেই ভোটার লিস্টে নাম উঠে যাবে।”
তাঁরই স্বামী মানিক কুমার মণ্ডল বলেন, “এখানে আমার বাবা-মায়ের নাম ছিল। আমি সেটা দেখিয়েই আবেদন করেছি। বিএলও আমাকে বলেছেন, হয়তো আমার হিয়ারিং হবে না। তারপরও কোনও সমস্যা হবে না, কারণ এখন সার্টিফিকেটটাও রয়েছে। তবে আমার স্ত্রীর ২০০২ সালে নাম ছিল না। এখন ওর সার্টিফিকেট রয়েছে।”
মতুয়া মহাসঙ্ঘের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মহিতোশ বৈদ্য বলেন, “এটা সত্যিই, যাঁরা আবেদন করেছিলেন, গত পরশু রাতে তাঁদের অনেকেই কাছে মেসেজ এসেছে। আমরা জেনেছি, সাড়ে তিন হাজার ফাইল আধিকারিকরা ছেড়ে দিয়েছেন, যাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছি। এখনও ১০ শতাংশ পাননি। সেক্ষেত্রে তো সংশয় রয়েছে। কেন্দ্র সরকার এই সার্টিফিকেট যাতে তাড়াতাড়ি ছাড়ে, সেটারই আবেদন রয়েছে। ”
বরং স্বস্তিই পাচ্ছেন কারণ তাঁদের কাছে নাগরিকত্বের কার্ড রয়েছে। কেউ আবার আনন্দের সাথে একটু কষ্ট পাচ্ছেন। বাংলাদেশের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার কষ্ট পাচ্ছেন। কিন্তু নাগরিকত্বের আবেদন করেছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। এত স্বল্প সময়ে এই লক্ষ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্বের সার্টিফিকেট পৌঁছে দেওয়া সম্ভব কিনা তা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, নাগরিকত্ব সংশোধন আইনে স্পষ্টতই বলা রয়েছে, সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যাঁরা ভারতে এসেছেন তাঁরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন। কারা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন সে বিষয়েও সুনির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা আছে। অর্থাৎ সেই জাতিগত শর্ত যদি মানা হয় তাহলেই তাঁরা নাগরিকত্ব পাবেন। স্বাভাবিকভাবেই সেই বিষয়গুলি যতক্ষণ না যাচাই হচ্ছে, যতদিন তাঁদের আবেদন বিচারাধীন থাকছে ততদিন তাঁরা ভারতের নাগরিক হিসাবে কখনও গণ্য হচ্ছে না।
