ব্যারাকপুর : অর্জুন সিং-এর পর এবার সৌগত রায়। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ফের বিস্ফোরক আরও এক শাসক দলের নেতা। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বললেন, পুলিশের একাংশ ঘুষ নেয়, কাজ করে না। সম্প্রতি ব্যারাকপুরে সোনার দোকানে যে খুনের ঘটনা ঘটেছে, সে কথা বলতে গিয়েই এমন দাবি করলেন তিনি। পুলিশ কাজ না করলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন বলেও দাবি করেছেন। ওই একই ঘটনার সূত্র ধরেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিস্ফোরক দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেতা অর্জুন সিং। পুলিশের ওপর যে রাজনৈতিক প্রভাব থাকে, সে কথা অকপটে বলেছিলেন তিনি। শাসক দলের নেতার মুখে এমন বক্তব্য নিয়ে গত দুদিন ধরেই চর্চা হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তার মধ্যেই সামনে এল সৌগত রায়ের মন্তব্য। তবে সৌগতর দাবি, পুলিশ খারাপ নয়। অনেকেই ভাল কাজ করেন।
গত বুধবার ব্যারাকপুরে একটি সোনার দোকানে দুষ্কৃতীদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে মালিকের ছেলের। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে কীভাবে দোকানের ভিতরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতীরা। দোকানের মালিকেরও পায়ে গুলি লাগে। জনবহুল এলাকার ভর সন্ধ্যায় এমন ঘটনা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। আতঙ্ক ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
এই ঘটনার পরস শুক্রবার কামারহাটিতে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে দমদম লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে আইনের পরিস্থিতি খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে। তিন বছর আগে মনীশ শুক্লা খুন হয়েছিলেন।” তিনি আরও বলেন, “সোনার দোকানে দুষ্কৃতী তাণ্ডবের ঘটনায় পুলিশ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। আমি মনে করি পুলিশ ভাল কাজ করার চেষ্টা করছে। কিছু পুলিশ অফিসার আছে, যারা ঘুষ খায়, কাজ করে না। তবে সবাই খারাপ নয়।”
পুলিশ কাজ করছে না এমন অভিযোগ পেলে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন বলেও দাবি করেছেন সৌগত। তিনি বলেন, “আমি পুলিশের কোনও দালাল নই। আমি কোনও গুন্ডা নিয়ে গাড়িতে চলাফেরাও করি না। আমি বিশ্বাস করি, আমি যদি কাউকে না মারি, তাহলে সে কেন আমাকে মারবে। আমি যদি শান্তিতে থাকি তাহলে কোনও গুন্ডা আমাকে কিছু করতে পারবে না। পুলিশ যদি কোনও ভুল করে তাহলে আমাকে জানান। থানার আইসি কাজ না করলে আমাকে জানান আমি কমিশনারকে বলব। কমিশনার যদি কাজ না করে আমাকে জানান আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলব। আমি একজন রাজনৈতিক লোক, আমি যাকে খুশি অভিযোগ জানাতে পারি।”
এই প্রসঙ্গে শাসক দলকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “উনি স্বীকার করে নিচ্ছেন পুলিশ ঘুষ খাচ্ছে। অর্জুন সিং-ও মানতে বাধ্য হচ্ছেন পুলিশ-গুন্ডাদের যোগসাজশ রয়েছে। ওঁরা এত বড় নেতা, পুরনো লোক, ওঁরা কেন সামলাতে পারছেন না? নাকি পুলিশের কন্ট্রোলে আর কিছু নেই?” মানুষের মন পেতে শাসক দলের নেতারা এমন কথা বলছেন বলে দাবি দিলীপের।