
উত্তর ২৪ পরগনা: রাত পোহালেই বাংলায় শুরু SIR। আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে মতুয়াদের মধ্যে। অথচ বাংলার রাজনীতিতে এই মতুয়ারাই সবসময় ক্ষমতার চাবিকাঠি হিসাবে বিবেচিত হয়েছেন। যুযুধান প্রতিপক্ষের মধ্যে হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। এই SIR উদ্বেগের আবহে ঠাকুরবাড়ি থেকে দেদার বিলি হচ্ছে ‘হিন্দুত্বের কার্ড’! ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য উদ্বাস্তু ও মতুয়াদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে ঠাকুরনগরে চলছে ক্যাম্প। এর উদ্দেশ্য হল মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের আওতায় এনে নাগরিকত্বের আবেদন করতে সহায়তা করা। এদিকে, নাগরিকত্বের আবেদন করতে লাগবে হিন্দুত্বের কার্ড কিংবা মতুয়া কার্ড! সেই কার্ড দেওয়ারই ক্যাম্প চলছে ঠাকুরবাড়িতে।
২০০২ সালের ভোটার তালিকায় যাঁদের নাম নেই, কিন্তু পরবর্তীতে তাঁরা ভোটার তালিকায় নাম তুলেছেন, তাঁদের নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। আর ঠাকুরবাড়িতে সেই কার্ড নেওয়ারই হিড়িক পড়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মতুয়ারা আসছেন হিন্দুত্বের কার্ড নিতে। কার্ড দিচ্ছে ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘ’, আর তাতে স্বাক্ষর রয়েছে সঙ্ঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুরের।
কার্ড নিতে আসা এরকমই এক ব্যক্তি বলেন, “আমরা যাঁরা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সদস্য, তাঁদের প্রত্যেকেই হিন্দুত্বের সার্টিফিকেট দেওয়া হচ্ছে। এই কার্ড দিয়ে আমরা CAA করাতে চাই।” উল্লেখ্য, শান্তনু ঠাকুর আশ্বাস দিয়েছিলেন, SIR-এ যদি নাম বাদ যায়, তাহলে CAA-এর মাধ্যমে নাগরিকত্ব পাবেন মতুয়ারা। শান্তনু ঠাকুর বলেন, “CAA-তে আবেদন করুন। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদন করব, যাদের ২০০২ সালের লিস্টে নাম নেই, তাদের নাম যাতে না কাটা হয়। প্রধানমন্ত্রী আগেই বলে দিয়েছেন, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নয়, ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যাঁরা এসেছেন, তাঁরা ভারতে থাকবেন। তাঁদের অন্যত্র পাঠানো হবে না।”
কিন্তু CAA-এর মাধ্যমে কীভাবে নাগরিকত্ব পাবেন? সেই প্রশ্নের উত্তরে শান্তনু ঠাকুর বলেন, “এটা নির্বাচন কমিশনের আওতায়, আরেকটা গৃহমন্ত্রালয়ের অধীনে। CAA করা মানে সে নাগরিক। নাগরিক হলেই তাঁর ভোটারকার্ড থাকবে। ফলে এই লোকগুলো তো ভারতের নাগরিক হবেই।”
যদিও মমতাবালা ঠাকুর বলেন, “মতুয়াদেরকে ধোঁয়াশার মধ্যে ফেলে দিয়েছেন শান্তনু ঠাকুর। মিথ্যা কথা বলছেন। নাগরিকত্বের আবেদন করলে ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে না, এমন কোন আইন নেই।” জানা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় এক লক্ষ মতুয়া এই কার্ডের জন্য আবেদন করেছেন।