
ব্যারাকপুর: অপরাধীকে ধরতে এসে ভুল ব্যক্তিকে আটক করার অভিযোগ উঠল ওড়িশা পুলিশের (Odisha Police) বিরুদ্ধে। পরে নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে আবার তাঁকে ছেড়েও দিল পুলিশ। এই ঘটনার পর থেকে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বেলঘরিয়ায় বাসিন্দা সুতানু সরকার।
কী ঘটেছে?
ওড়িশায় এক বেসরকারি সংস্থায় কুড়ি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে সে রাজ্যের পুলিশ বেলঘরিয়া নীলগঞ্জ রোডে এক ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালায়। সুতানু সরকার নামে ওই ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে তল্লাশি হুকুমনামা ছাড়াই তল্লাশি চালানোর অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। সুতানু বাবু একজন এলআইসি কর্মী। তারপর তাঁর বাড়ি থেকে ল্যাপটপ পেনড্রাইভ সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেন। শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে বেলঘরিয়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
সুতানুবাবু দাবি, বেলঘড়িয়া থানায় প্রায় তিন ঘন্টা তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়। তারপর পুলিশ আধিকারিকেরা সেই সংস্থার কুড়ি কোটি টাকার প্রতারণা মামলার কাগজপত্র নিয়ে এসে দেখতে পায় যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাঁরা ধরতে এসেছেন বেলঘরিয়ার বাসিন্দা সুতানু সরকার সেই ব্যক্তি নন।
আসল অপরাধীর বাবার নামের সঙ্গে সুতানু সরকারের বাবার নামের মধ্যে কোনও মিল নেই। তখনই হয় খোলাসা। পুলিশ আধিকারিকরা বুঝতে পারেন তাঁরা ভুল মানুষকে গ্রেফতার করেছেব। এরপর ওড়িশা পুলিশের তরফ থেকে সুতানু সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়া হয় এবং তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার করা জিনিসপত্র সহ তাঁকে তার বাড়িতে ছেড়ে আসেন তাঁরা।
এই ঘটনার পর মানসিকভাবে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছেন সুতানু সরকার। ঘটনার পর থেকে অসুস্থ বোধ করছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই ওড়িশা পুলিশের নামে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনেরেট দফতরে ইমেল মারফত অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও, এই বিষয়ে পুলিশের তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
ওড়িশা পুলিশের এই ধরনের ঘটনায় যথেষ্ট আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন সুতানু সরকার ও তাঁর পরিবারের লোকজন। ঘটনার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে সুতানু সরকার বলেন, “ওনারা আমায় জিজ্ঞাসা করে আপনার বাবার নাম কী? আমি বললাম শুধাকর সরকার। তখন ওনারা বলেন আমরা যাকে খুঁজছি তাঁর বাবার নামের সঙ্গে আপনার বাবার নাম মিলছে না। আমাদের ভুল হয়ে গিয়েছে। আমরা আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি। চলুন একটু চা খেয়ে আসি। তারপর বাড়িতে এসে সব দিয়ে গিয়েছে। আমি আগে এমন দেখিনি। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। কালকে আমি শরীর খারাপের জন্য বিছানা ছেড়ে উঠতে পারিনি। তবে আমি ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে মেইল করেছি।”