
উত্তর ২৪ পরগনা: ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন রাজু ঝা (Raju Jha Murder Case)। সেই মঞ্চে সেদিন উপস্থিত ছিলেন বিজেপির দুই সাংসদ। একজন দিলীপ ঘোষ, অন্যজন অর্জুন সিং (Arjun Singh)। দিলীপ আবার সে সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতিও। সেই রাজুর এই মৃত্যু চমকে দিয়েছে অর্জুন সিংকে। রাজুকে নিয়ে টিভি নাইন বাংলায় খোলাখুলিই কথা বললেন ব্যারাকপুরের সাংসদ। অর্জুনের বক্তব্য, এই খুন রাজনীতির জন্য নয়, ব্যবসায়িক কারণেই। অর্জুনের সন্দেহ রয়েছে রাজুর গাড়ির চালককে নিয়েও। একইসঙ্গে তিনি জানান, তাঁর কাছে রাজু ছিলেন ছোট ভাইয়ের মতো। বড় দাদার প্রাপ্য সম্মানও তিনি পেয়েছেন শনিবার গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত কয়লার কারবারি রাজু ঝায়ের কাছ থেকে। তাই রাজুর পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন সাংসদ। বিহারে সাংসদ অর্জুন সিংয়ের যেখানে বাড়ি, সেই এলাকাতেই রাজুরও বাড়ি। যদিও অর্জুন জানান, ব্যাঙ্ককে বিমানবন্দরে প্রথম রাজুর সঙ্গে পরিচয়।
রাজু ঝায়ের বিজেপি-যোগ নিয়ে এদিন অর্জুন সিং বলেন, “ওর যোগদানের দিন আমি ছিলাম, দিলীপদাও ছিলেন। তবে আমার হাত ধরে যোগদান বলাটা ভুল। কারণ, সেই সময় আমার অত ক্ষমতা ছিল না যে কাউকে জয়েন করাব। দিলীপদা সভাপতি ছিলেন। এই যোগদানের পর রাজু গ্রেফতারও হয়। জেলে ছিল। জেল থেকে বেরোনোর পর আর রাজনৈতিক কাজকর্মে দেখতাম না। তবে রাজু ঝা আমার খুব কাছের লোক ছিল। আমার ছোট ভাইয়ের মতো ছিল। একটা সময় কী করেছে আমি জানি না। তবে পরে ও ভাল ব্যবসায়ী ছিল।”
অর্জুনের দাবি, “অনেক পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গেও ওর ভাল সম্পর্ক ছিল। এখন কেউ সামনে বলবে না কার সঙ্গে কার ভাল সম্পর্ক ছিল। তবে আমি বলছি আমার সঙ্গে ওর ভাল সম্পর্ক ছিল। ছোটভাই হিসাবেই মানতাম। ও আমাকে সেই সম্মানও দিত। ওর ব্যবসার সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই, তবে ও ছোট ভাই আমার। আজ ওর পরিবারের এই ক্ষতি, আমি নিশ্চয়ই ওর পাশে থাকব। আমি হয়ত ২-১ দিনের মধ্যে যাবও ওর বাড়িতে।”
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে রাজু ঝায়ের পরিচিতি ‘কয়লা মাফিয়া’ হিসাবে উঠে আসা নিয়েও অর্জুন বলেন, “ও নিজের ইচ্ছায় বিজেপিতে আসে। সেখানে আমার কোনও ভূমিকা ছিল না। ২০২১ সালে ও যোগ দেয়। তারপর ও পার্টি করত না। আর ওখানে কয়লা চুরির যে ব্যবসা ওখানে চলত, সেটা অনেকদিন ধরেই বন্ধ। কয়লার মধ্যে ও ছিলও না। অনেকে বলছে কয়লা মাফিয়া, সেটা নয়।”
অর্জুনের দাবি, তাঁর ‘ছোট ভাইয়ের মতো’ রাজু ইদানিং পুরোদমে ব্যবসাই করছিলেন। অর্জুনের কথায়, “ওর কোনও গুন্ডামি, মাস্তানিতে এখন নাম নেই। একটা সময় নিশ্চয়ই কিছু করেছিল, তার জন্য এই ট্যাগ লেগেছিল। তারপর দেখলাম ওর ব্যবসা। হোটেল, মেডিক্যাল হাসপাতাল করছিল। জানি না কী হল, কেন খুন হয়ে গেল। তবে রাজনীতি এর কারণ মনে হয় না, হলে ব্যবসায়িক বিষয়ই হবে।”